প্রবাল প্রাচীর
ভূমিকাঃ সমুদ্রতলদেশের প্রাকৃতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রবাল
প্রাচীর ও অ্যাটলের গঠন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । প্রবাল হল সিলেনটেরাটা গোষ্ঠীর
এক সামুদ্রিক জীব। সমুদ্রের তলদেশে বা দ্বীপের
ন্যায় অবস্থান করে । ক্রান্তীয় অঞ্চলে ৩০ ড্রিগ্রি উত্তর থেকে ৩০ ড্রিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে
এরা অবস্থান করে। চুনাপাথর, ডলোমাইট দ্বারা গঠিত হয়। এরা বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে যথা
সবুজ, হলদে, বাদামি সাদা প্রভৃতি বর্ণের হয়ে থাকে।
প্রবাল প্রাচীরের
কীটগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হল কোরাল পলিপ। এদের শরীর থেকে নিঃসৃত পদার্থের
সাথে সমুদ্রের জলের ক্যালসিয়াম কার্বনেট মিশ্রিত হয়ে কীটের দেহের বহিরারণ তৈরি করে।
অধিকাংশ সময় এরা একে অন্যের সঙ্গে দলবদ্ধভাবে এক একটি উপনিবেশ গঠন করে।
সংজ্ঞাঃ প্রবাল হল
জেলিফিস বা সিলেনরাটা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একপ্রকার অতিক্ষুদ্র সামুদ্রিক প্রাণী যা
পলিপ নামে পরিচিত। এই পলিপের মৃত্যুর পর মৃতদেহগুলি সমুদ্রতলদেশে সঞ্চিত হয় । কালক্রমে
এরা স্তূপে পরিণত হয় । একে প্রবাল স্তূপ বা প্রবাল প্রাচীর বলে।
প্রবালের বৈশিষ্ট্যঃ
(১) প্রাণীঃ প্রবাল হল এক ধরনের ক্ষুদ্রাকার সামুদ্রিক প্রাণী
(২) আকৃতিঃ এরা আকৃতিতে এক একটি পিঁপড়ের মতো।
(৩) প্রকৃতিঃ এরা সাধারণত দলবদ্ধভাবে বসবাস করে থাকে এবং সমুদ্রে উপনিবেশ
গঠন করে থাকে।
(৪) আবাসস্থলঃ এরা সাধারণত অগভীর সমুদ্রের মহিসোপান অঞ্চলে বসবাস করে
থাকে।
(৫)গমনঃ এরা গমন সম্পুর্নভাবে অক্ষম।
(৬) জীবনধারণঃ এরা কর্ষিকা দ্বারা সমুদ্রের তলদেশে থেকে খাদ্য সংগ্রহ
করে বেঁচে থাকে।
(৭) সুরক্ষাঃ এরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য নিজেদের চারদিকে ক্যলাসিয়াম
কার্বনেটের একটি শক্ত আবরণ তৈরি করে।
(৮) সামুদ্রিক
রেনফরেস্টঃ এক সঙ্গে অসংখ্য
প্রবাল সারিবদ্ধ ভাবে অবস্থান করে কলোনি গড়ে তোলে তাই একে সামুদ্রিক রেনফরেস্ট বলে।
।
প্রবাল প্রাচীর গড়ে উঠার অনুকূল পরিবেশঃ
(১) অক্ষাংশঃ নিরক্ষরেখার ৩০ ড্রিগ্রি উত্তর ও দক্ষিণে ৩০ ড্রিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে প্রবালের
বসবাসের জন্য আদর্শ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায়।
(২) উষ্ণতাঃ সমুদ্র জলের উষ্ণতা ২০ – ৩০ ড্রিগ্রি মধ্যে সমুদ্রপ্রবাল
গড়ে উঠে। ২০ ড্রিগ্রির কম বা ৩০ ড্রিগ্রির বেশী তাপমাত্রায় জন্মাতে পারে না।
(৩) গভীরতাঃ সমুদ্র গভীরতা ১৫০-১৮০ ফুট বা ২৫ থেকে ৩০ ফ্যাদম প্রবাল
গড়ে উঠার জন্য আদর্শ।
(৪) লবণতাঃ বেশী লবনতা সমুদ্র জলের পক্ষে ক্ষতিকর।কারণ লবনতার পরিমাণ
বৃদ্ধি পেলে পলিপের শরীরে caco3 পরিমাণ কমতে থাকে।
(৫) স্বাদুজলঃ প্রবালকীট স্বাদু বা মিষ্টি জলে জন্মাতে পারে না। তাই
তারা উপকূল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করে।
প্রবালের প্রকারভেদঃ
সাধারণত প্রবালকে
দুই ভাগে ভাগ করা যায়। (ক) সরল প্রবাল (Ahermatype coral) (খ) জটিল প্রবাল (Hermatype coral )
(ক) সরল
প্রবাল (Ahermatype coral)ঃ যেসব প্রবাল দলবদ্ধভাবে বসবাস না করে স্বতন্ত্রভাবে
বা আলাদাভাবে অবস্থান করে। তাকে সরল প্রবাল (Ahermatype coral) বলে।
(খ) জটিল
প্রবাল (Hermatype coral )ঃ যেসব প্রবাল সংঘবদ্ধ
ভাবে অবস্থান করে। তাকে জটিল প্রবাল (Hermatype coral ) বলে।
প্রবালের প্রকারভেদঃ গঠন , আকৃতি ও অবস্থান
অনুসারে প্রবালকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
(১) প্রান্তদেশীয়
প্রবাল প্রাচীর
(২) প্রতিবন্ধক প্রবাল
প্রাচীর
(৩) অ্যাটল
(১) প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর
ক) সংজ্ঞাঃ যেসব প্রবাল প্রাচীর ভূখণ্ডের বা মহাসাগরীয় দ্বীপের খুব
কাছাকাছি বা সংলগ্নে প্রায় সমান্তরাল্ভাবে গড়ে উঠে তাদের প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর
বলে।
উদাহরণঃ অস্ট্রেলিয়ার অদূরে উত্তর – পূর্বে , ফ্লোরিডা উপকূল
, ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যবর্তী পক প্রণালীতে প্রান্তদেশীয় প্রবাল প্রাচীর দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্যঃ
১) প্রান্তদেশীয়
প্রবাল প্রাচীর সাধারণত মূল ভূখণ্ডের বা কোনও দ্বীপের সন্নিহিত সামুদ্রিক অঞ্চলে গড়ে
উঠতে দেখা যায়।
২) অনেক সময় প্রান্ত
দেশীয় প্রবাল প্রাচীর ও মূল ভূখণ্ডের মধ্যবর্তী অংশে সরু ও অগভীর উপহ্রদ বা লেগুন থাকে।
একে বোট চ্যানেল বলে।
৩) প্রান্তদেশীয়
বা বেষ্টনী প্রবাল প্রাচীর সাধারণত ০.৫ থেকে ২.৫ কিমি কিংবা তার চেয়েও অপ্রশস্ত হয়ে
থাকে।
৪) প্রান্ত দেশীয়
প্রাচীরের পৃষ্ঠদেশ অসমান প্রকৃতির হয়।
(২) প্রতিবন্ধক
প্রবাল প্রাচীরঃ
সংজ্ঞাঃ যেসব প্রবাল প্রাচীর সমুদ্র উপকূল কিংবা কোনও দ্বীপ থেকে
কিছুটা দূরে উপকূলের প্রায় সমান্তরালে সৃষ্টি হয়। তাকে প্রতিবন্ধক প্রবাল প্রাচীর বলে। স্থলভাগ ও বেরিয়ার
রীফের মাঝে অবস্থানকারী অগভীর জলরাশিকে উপহ্রদ বলে। ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ হল ওড়িশা
উপকূলের চিল্কা হ্রদ।
এইসব উপহ্রদ বা লেগুনের নির্মল জলে অনেক সময় বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক লতা – গুল্ম ও অগাছা জন্মায় তাকে প্রবাল উদ্যান
বলে।
উদাহরণঃ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর – পুর্বে অবস্থিত
“ গ্রেট বেরিয়ার রীফ” হল পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রতিবন্ধক প্রবাল প্রাচীর । এতির
দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০০ কিমি এবং প্রস্থ ২৬-১২৮কিমি
বৈশিষ্ট্যঃ
১) বেরিয়ার রীফ হল যে কোনও প্রবাল প্রাচীরের তুলনায় দৈর্ঘ্যে , প্রস্থে
, উচ্চতায় , বিশালতায় ও বিস্তারে অনেক বেশী হয়ে থাকে।
২) ১৫-২৫° ঢালু হয়ে থাকে।
৩) স্থলভাগ ও বেরিয়ার রীফের মাঝে অবস্থানকারী অগভীর জলরাশিকে উপহ্রদ বলে।
৪) কোনও দ্বীপের চারপাশে বেরিয়ার রীফ গড়ে উঠে।
৫) স্থলভাগ থেকে বেরিয়ার রীফের মধ্যে ৩০ মিটার থেকে ৬ কিমি দূরত্ব থাকে।
৩) অ্যাটলঃ
সংজ্ঞাঃ যেসব প্রবাল প্রাচীর কোনও মৃত নিমজ্জিত আগ্নেয়গিরি বা মালভূমি উপর কিংবা
চারিদিকে বলয়ের আকারে গড়ে উঠে তাদের অ্যাটল বলে।
উদাহরণঃ প্রশান্ত মহাসাগরের অ্যাটল বেশি দেখা যায়।
বৈশিষ্টঃ
১) অ্যাটল অনেকটা বৃত্তাকার , উপবৃত্তাকার কিংবা ঘোড়ার ক্ষুরের মতো দেখতে
হয়।
২) অ্যাটলের মাঝে থাকা দ্বীপ ক্রমনিমজ্জমানের মাধ্যমে অদৃশ্য হয়ে যায় বলে। অ্যাটলের মাঝে কোনও দ্বীপ থাকে না
৩) অ্যাটলগুলির গভীর সমুদ্র মঞ্চ থেকে দূরে অবস্থান করে।
৪) অ্যাটলের বাইরের ঢাল অত্যন্ত খাঁড়াভাবে প্রসারিত হয়েছে।
অ্যাটলের প্রকারভেদঃ
১) প্রকৃত অ্যাটলঃ উপহ্রদের চারপাশে গড়ে উঠা দ্বীপহীন বৃত্তাকার প্রবাল
প্রাচীরকে প্রকৃত অ্যাটল বলে।
২) দ্বীপীয় অ্যাটলঃ উপহ্রদের কোনও দ্বীপের চারদিকে বৃত্তাকারে
গড়ে উঠা প্রবাল প্রাচীরকে দ্বীপীয় অ্যাটল বলে।
৩) প্রবাল দ্বীপঃ প্রাথমিক অবস্থায় কোনও দ্বীপ না থাকলেও সামুদ্রিক ক্ষয়
ও সঞ্চয়ের কারণে দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে।
SAYANTANI SINGH Msc, B.Ed
GEOGRAPHIA
If you want to join my telegram group
YOU TUBE CHANNEL LET'S LEARN GEOGRAPHY click here
NCERT CLASS_6 SHORT NOTE CLICK HERE
NCERT CLASS _6 SOLUTION CLICK HERE
ICSE class -ix click here
ICSE class -x click here
CLASS 6 WBBSE GEOGRAPHY CLICK HERE
জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগপ্রশ্ন-উত্তর click here
REGIONAL THEORIES CLICK HERE
দ্বাদশ শ্রেণী ভূগোল CLICK HERE
CURRENT AFFAIRS CLICK HERE
NOTES OF HUMAN GEOGRAPHY AND AND POPULATION GEOGRAPHY click here
CONTINENTAL DRIFT THEORY BY FB TAYLOR CLICK HERE
CONTINENTAL DRIFT THEORY BY TAYLOR IN BENGALI CLICK HERE
CONTINENTAL DRIFT THEORY BY WEGNER CLICK HERE
CLIMATE OF INDIA CLICK HERE
ভূমিরূপ গঠন কারী প্রক্রিয়া ; উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল click here
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ click here
মহিসঞ্চারন তত্ত্ব click here
Ugc net 2007 june paper 2 geography click here
Ugc net 2006 december paper 2 geography click here
UGC NET GEOGRAPHY 2007 DECEMBER CLICK HERE
UGC NET GEOGRAPHY 2008 JUNE CLICK HERE
WB CLASS 6 GEOGRAPHY CHAPTER 4 CLICK HERE
UGC NET GEOGRAPHY 2009 JUNE CLICK HERE
PLATE TECTONIC THEORY CLICK HERE
Thank you for visiting this page.we provide
geography related study materials on daily basis..
0 Comments