CONTINENTAL DRIFT THEORY BY ALFRED WEGNER// ওয়েগনারের মহিসঞ্চারণ তত্ত্ব
মহাদেশীয় সঞ্চারণ তত্ত্ব আলফ্রেড ওয়েবার
ঐতিহাসিক বিবর্তন
মহাদেশ ও মহাসাগরের উৎপত্তি ও গঠনের ক্ষেত্রে মহাদেশীয় সঞ্চরণ তত্ত্ব (Continental Drift Theory) খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১৫৯৬ সালে একজন ডার্চ ম্যাপ মেকার আব্রাহাম অর্টেলিয়াস সর্বপ্রথম মহাদেশ সঞ্চরণের ধারণাটি সর্বপ্রথম উল্লেখ করেন।
১৬২০ সালে ফ্রান্সিস বেকনের লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ ‘নোভাম অর্গানাম’ এ মহীসঞ্চরনের বিবরণ দিয়েছিলেন ।
১৭৬৫ সালে থিওডোর লিলিইয়েনথাল সমগ্র মহাদেশগুলির একত্রে অবস্থানের কথা বলেন।
১৮০১ সালে আলেকজান্ডার হামবোল্ড তাঁর লেখনীতে মহিসঞ্চারনের কথা বলেন।
১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে স্নাইডার তাঁর লেখা বইতে মহাদেশগুলির একত্রে অবস্থানের কথা বলেন , তিনি আরও বলেন জে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের শিলাস্তরে উদ্ভিদ জীবাশ্মের মধ্যে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
১৯০৮ সালে এফ. বি. টেলর এ বিষয়ে ধারণা দিলেও বিজ্ঞানী সমাজকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।
মূলকথা
ওয়েগনার পুরাজলবায়ু , পুরাজীববিদ্যা , পুরাউদ্ভিদবিদ্যার উপর নির্ভর করে এই ধারণা দেন যে প্রাথমিক অবস্থায় অর্থাৎ কার্বনিফেরাস যুগে সমস্ত ভুখণ্ডগুলি একত্রিত হয়ে বিশালাকার একটি ভূখণ্ড অবস্থায় অবস্থান করত । এই ভূখণ্ডকে প্যাঞ্জিয়া নামে পরিচিত এবং প্যাঞ্জিয়াকে ঘিরে যে বিশাল জল্ভাগ ছিল তাকে প্যান্থালাসা বলে।
ওয়েগনার মতে মহাদেশীয় ভূত্বক সিয়াল দ্বারা গঠিত এবং মহাসাগরীয় ভূত্বক সীমা দ্বারা গঠিত হয়। এই মহাদেশীয় ভূত্বক , মহাসাগরীয় ভূত্বকের উপর ভাসমান অবস্থায় রয়েছে।
কার্বনিফেরাস যুগে দক্ষিণ মেরুর কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালের কাছে অবস্থিত ছিল। আফ্রিকাকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য মহাদেশগুলি অবস্থান করত।
মেসজয়িক উপযুগে প্যাঞ্জিয়া ভেঙে দুই ভাগে বিভক্ত হয়
লরেশিয়া বা আঙ্গারাল্যান্ডঃ- প্যানজিয়ার উত্তরের অংশটি অর্থাৎ বর্তমানে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়া লরেশিয়া বা আঙ্গারাল্যান্ড নামে পরিচিত ছিল।
গন্ডোয়ানাল্যান্ডঃ- প্যানজিয়ার দক্ষিণের অংশটি অর্থাৎ বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, উপদ্বীপীয় ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং আন্টার্কটিকা গন্ডোয়ানাল্যান্ড নামে পরিচিত ছিল।
টেথিস সাগরঃ- আঙ্গারাল্যান্ড ও গন্ডোয়ানাল্যান্ড একটি অগভীর সংকীর্ণ সমুদ্র দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল, যার নাম টেথিস সাগর।
প্রাথমিক অবস্থায় উত্তর দিকের মহাদেশগুলিতে নিরক্ষীয় ,ক্রান্তীয় উষ্ণ জলবায়ু লক্ষ্য করেন এবং দক্ষিণ দিকের মহাদেশগুলিতে মেরুপ্রদেশীয় শীতল জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়। প্যাঞ্জিয়া ভাঙনের পর থেকে বিভিন্ন দিকে মহাদেশগুলির সঞ্চারণ হতে থাকে এবং লরেশিয়ার উষ্ণ জলবায়ুর পরিবর্তে শীতল নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু লক্ষ্য করা যায় এবং গণ্ডোয়ানার মহাদেশগুলিতে ক্রান্তীয় জলবায়ু লক্ষ্য করেন।
উত্তর মেরু
(১) সিলুরিয়ান যুগে ১৪ ডিগ্রি উত্তর/১২৪ ডিগ্রি পশ্চিম।
(২) কার্বনিফেরাস যুগে ১৬ ডিগ্রি উত্তর/১৪৭ ডিগ্রি পশ্চিম।
(৩) টার্শিয়ারি যুগে ৫১ ডিগ্রি উত্তর/১৫৩ ডিগ্রি পশ্চিম।
দক্ষিণ মেরু
পার্মিয়ান যুগে ৫০ ডিগ্রি দক্ষিণ/৪৫ ডিগ্রি পূর্ব থেকে ক্রমশ ৯০ ডিগ্রি দক্ষিণ অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়।
মহাদেশীয় সঞ্চারণের জন্য দায়ী শক্তিসমূহঃ
1. বৈষম্য মূলক অভিকর্ষজ বল।
2. জোয়ারি শক্তি
বিভিন্ন যুগে মহাদেশীয় সঞ্চারণ
জিগ – সো – ফিট
আটলান্টিক মহাসাগর এর বিপরীত উপকূল রেখার মধ্যে ওয়েগনার সেই রকম জোর লক্ষ করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ব্রাজিলের রক অন্তরীপ গিনি উপসাগরে এবং পশ্চিম আফ্রিকার স্ফীত অংশ মেক্সিকো উপসাগরে জোড়া লাগানো যায়। ওয়েগনারের মতে মহীসঞ্চরণ এর ফলে মহাদেশগুলি বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ সমূহ
আটলান্টিক মহাসাগরের দুপাশে ভূ-গাঠনিক অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এর প্রমাণ হিসেবে ওয়েগনার আপালেশিয়ান পর্বতের কথা উল্লেখ করেন।আপালেশিয়ান পর্বতে হার্সেনিয়ান যুগের ভাঁজ ক্যালিডোনিয়ান যুগের ভাঁজের সঙ্গে ছেদ করে। ছেদ করার পর ক্যালিডোনিয়ান যুগের ভাঁজ হার্শিনি অন যুগের ভাঁজের উত্তর এ অবস্থান করে। আটলান্টিক মহাসাগরের বিপরীত পারে অর্থাৎ ইউরোপে এই দুটি ভাঁজ এর অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। এখানে ক্যালিডোনিয়ান যুগের ভাঁজ সর্বদা হার্সেনিয়ান যুগের ভাঁজের উত্তরে অবস্থান করে। পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে ক্যালিডোনিয়ান যুগের ভাঁজ রয়েছে।
জীবাশ্ম সংক্রান্ত প্রমাণ
পার্মিয়ান কার্বনিফেরাস যুগে সঞ্চিত গণ্ডশিলা সমন্বিত শিলাস্তরের মধ্যে গ্লসপটেরিস নামক এক প্রকার ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদ এর জীবাশ্ম পাওয়া যায়। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ, আন্টার্টিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় এই প্রকার জীবাশ্মের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।
একইভাবে ক্যাঙ্গারু জাতীয় প্রাণী প্রচুর পরিমাণে দক্ষিণ আমেরিকার চিলিতে এবং অস্ট্রেলিয়ায় জীবন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। অন্যান্য মহাদেশে এদের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। এই ঘটনা দক্ষিণ গোলার্ধের মহাদেশগুলির একত্র সমাবেশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে।
কার্বনিফেরাস যুগের কয়লা ঃ
বর্তমানে উত্তর গোলার্ধে যে সব অঞ্চল থেকে কয়লা আহরণ করা হচ্ছে তা ওয়েগনার মর অনুযায়ী সেই অঞ্চলগুলি পুর্বে ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থান করত।
হিমবাহের অস্তিত্ব
প্রাক কার্বনিফেরাস যুগে দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা , দক্ষিণ ভারত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ও আন্টার্কটিকা মহাদেশে হিমবাহের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় কিন্তু বর্তমানে এই দেশগুলির একটি তেও হিমবাহ নেই ।
পর্বত গঠন ঃ
পৃথিবীর বিভিন্ন পর্বত গঠনের বর্ননা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আফ্রিকা ও ভারতীয় উপদ্বীপ এবং ইউরােপের সংঘর্ষের ফলে মধ্যবর্তী টেথিস সাগরের সঞ্চিত পলিরাশি কুঞ্চিত হয়ে আল্পস ও হিমালয় পর্বতশ্রেণির উদ্ভব হয়।পশ্চিমদিকে সঞ্চরণশীল উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা প্রশান্ত মহাসাগরের সিমা স্তরে বাধা পেয়ে ভাঁজপ্রাপ্ত হয়ে পশ্চিমপ্রান্তে রকি ও আন্দিজ পর্বতশ্রেণী সৃষ্টি করে।
মেরুর সরণঃ- বিভিন্ন ভূতাত্ত্বিক যুগে মহীসঞ্চরণের সঙ্গে পৃথিবীর দুই মেরুর অবস্থান বিভিন্ন অক্ষাংশে পরিবর্তিত হয়।
সমালোচনা
১। জিগ সও ফিটের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা
২। সঞ্চারণের জন্য শক্তির অভাব
৩। জীবাশ্মের বণ্টন
৪। সঞ্চারণের সময়কাল
৫। পর্বত গঠন তত্ত্বের সমালোচনা
৬। মেরুর সরন
৭। পুরাজলবায়ু সম্পর্কিত প্রমান
GEOGRAPHIA
If you want to join my telegram group
Click here
FOR DOWNLOAD THE PDF
1. FILE NAME:মহাদেশীয় সঞ্চারণ তত্ত্ব
2.FILE SIZE: 2.2mb
3. DOWNLOAD FILE: CLICK HERE
YOU TUBE CHANNEL LET'S LEARN GEOGRAPHY click here
বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ click here
0 Comments