Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY) পঞ্চম অধ্যায়ঃবায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ

 উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY) পঞ্চম অধ্যায়ঃবায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ

নমস্কার ,  উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY): সকল ছাত্র ও  ছাত্রীকে  জিওগাফিয়াতে স্বাগতম। আজকে এই ব্লগে আমি মূলত তোমাদের পঞ্চম অধ্যায়ের বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ থেকে কিছু পার্থক্য যা ২০২১ সালের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন। আশা করি তোমাদের সাহায্য হবে। সাজেশনভিত্তিক প্রশ্ন যা তোমাদের অবশ্যই কাজে আসবে। 



ওয়াকার সার্কুলেশনঃ

সংজ্ঞাঃ নিরক্ষরেখা বরাবর পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপের অনুভূমিক ঢালের দ্বারা বায়ু পুর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয় একে ওয়াকার সার্কুলেশন বলে।

নামকরণঃ ১৯২২-২৩ সালে বিজ্ঞানী গিলবার্ট ওয়াকারের নামানুসারে এর নাম হয় ওয়াকার সার্কুলেশন

অবস্থানঃ নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ৩০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে এর অবস্থান।

উৎপত্তিঃ উষ্ণমণ্ডলের বায়ু গরম ও হালকা হওয়ার ফলে বায়ু উদ্ধমুখি হয় , অন্যদিকে শীতল অঞ্চলে শীতল ও ভারী বায়ুর অবতরণ এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় যারফলে পুর্ব থেকে পশ্চিম দিকে তীক্ষ্ণ বায়ুরচাপের ঢাল তৈরি হয়। দুই – তিন বছর অন্তর এই আবর্তনের দিক পরিবর্তিত হয়ে পশ্চিম থেকে পুর্ব দিকে প্রবাহিত হয় এই পরিবর্তনকে দক্ষিণ দোলন বা Southern Oscillation বলে।



পর্যায়সমুহঃ

এই ওয়াকার সার্কুলেশনের দুইটি পর্যায় দেখা যায়ঃ

১) সক্রিয় অবস্থা

২) নিষ্ক্রিয় অবস্থা

সক্রিয় অবস্থা

নিষ্ক্রিয় অবস্থা

এই অবস্থায় চারটি ওয়াকারের সৃষ্টি হয়

এই অবস্থায় পাঁচটি ওয়াকারের সৃষ্টি হয়।

আফ্রিকার আমাজন অঞ্চল, মধ্য আফ্রিকা , ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।এর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়

পেরু, ইকুয়েডর, তাহিতি অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় । 

 

 

 

 

 

 

 



টর্নেডো সম্পর্কে আলোচনা কর।

ধারনাঃ টর্নেডো কথাটি স্পেনীয় শব্দ যার অর্থ বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টি ।এটি সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় । অতি স্বল্পস্থান জুড়ে বায়ুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে, বায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র হয়ে উর্ধমুখে উঠে গেলে সেই স্থান দখলে পার্শ্ববর্তী  উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু ঐ অঞ্চলে প্রবেশ করলে অতি বিধ্বংসী টর্নেডোর সৃষ্টি হয়।



বৈশিষ্টঃ টর্নেডোর বৈশিষ্টগুলি হল

১) ব্যাসঃ ১০০ মিটার থেকে ৫০০ মিটার পর্যন্ত হয়।

২) কেন্দ্রে বায়ুর চাপঃ টর্নেডোর কেন্দ্রে ৯০০ মিলিবারের কম বায়ুর চাপ থাকে।

৩) গতিবেগঃ বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ২০০ কিমি থেকে ৫০০ কিমি।

৪) স্থায়িত্বঃ এটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়না তবে অতীব বিধ্বংসী হয়ে থাকে ।

৫) সময়কালঃ বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে সৃষ্টি হয় ।

পৃথিবীর প্রায় ৯০% টর্নেডো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি উপত্যকাতে ঘটে।

 

হ্যারিকেন বা  টাইফুন সম্পর্কে আলোচনা কর।

ধারনাঃ ক্রান্তীয় মণ্ডলের পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি বা তারবেশী হলে সমুদ্রের উপরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়, ফলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে বায়ু প্রচণ্ড বেগে ছুটে আসে ঐ অঞ্চলে প্রবেশ করার ফলে  যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় তা হ্যারিকেন নামে পরিচিত। এই হ্যারিকেন বিভিন্ন জায়গাতে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। চিন সাগরে এর নাম টাইফুন , অস্ট্রেলিয়াতে উইলি উইলি ।


বৈশিষ্টঃ হ্যারিকেন বা টাইফুনের বৈশিষ্ট গুলি হল-

১) ব্যাসঃ ১৫০ থেকে ৬৫০ কিলোমিটার এই ঝড়ের ব্যাস হয়ে থাকে ।

২) ঝড়ের কেন্দ্রের ব্যাসঃ ১০-১৫ কিলোমিটার হয়ে থাকে এর কেন্দ্রের ব্যাস হয়ে থাকে । এই অঞ্চল শান্ত ও বৃষ্টিহীন থাকে একে ঝড়ের চক্ষু বলে।

৩)গতিবেগঃ ঘণ্টায় এর গতিবেগ ১৫০-২০০ কিলোমিটার হয়ে থাকে।

৪) স্থায়িত্ব ও ধ্বংসাত্মকঃ স্বল্পস্থায়ী এবং সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টিপাত ঘটে।

৫) সময়কালঃ জুলাই থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে আবির্ভুত হয় । 

 

এল নিনো সম্পর্কে যা জানো লেখঃ

অর্থঃ এল নিনো কথাটি স্প্যানিশ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ ছোটো ছেলে ।

সংজ্ঞাঃ ক্রান্তীয় পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থাৎ পেরু, ইকুয়েডর অঞ্চলের পশ্চিম উপকূলে কোনও কোনও বছর খ্রিস্টমাসের সময় যে স্রোত প্রবাহিত হয় তাকে বলে এল_নিনো ।



উৎপত্তিঃ কোনও কোনও বছর পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় , ফলে পেরু , ইকুয়েডর অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং আয়নবায়ু দুর্বল থাকায় জলরাশিপুর্ন জলীয় বাস্পপুর্ন বায়ু পুর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হতে পারে না। ফলে ঐ উপকুলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং তখন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে খরা দেখা যায়।

সমুদ্র স্রোতের উৎপত্তিঃ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পুর্ব উপকূল অর্থাৎ পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল অঞ্চলে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত দেখা যায়।

ওয়াকার সার্কুলেশনের অবস্থাঃ বিপরীত মুখী অবস্থায় এল নিনোর সৃষ্টি

বায়ুরচাপঃ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পুর্ব উপকূলে নিম্নচাপ ও পশ্চিম উপকূলে উচ্চচাপ সৃষ্টি হয়।

সমুদ্রজলের উষ্ণতাঃ স্বাভাবিকের থেকে ১ – ৫ ডিগ্রি বেশী থাকে

আয়নবায়ুর অবস্থাঃ আয়নবায়ু দুর্বল থাকে।

মৌসুমি বায়ুর উপর প্রভাবঃ এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেরিতে আসে এবং বৃষ্টিপাত কম হয়

বৃষ্টিপাত ও খরাঃ এল নিনোর প্রভাবে অস্ট্রেলিয়া ,দক্ষিণ পুর্ব এশিয়া অঞ্চলে খরা সৃষ্টি হয় । পেরু ইকুয়েডর অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়।

 

লা  নিনো সম্পর্কে যা জানো লেখঃ

অর্থঃ লা নিনা কথাটি স্প্যানিশ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ ছোটো মেয়ে ।

সংজ্ঞাঃ ক্রান্তীয় পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থাৎ পেরু, ইকুয়েডর অঞ্চলের পশ্চিম উপকূলে কোনও কোনও বছর খ্রিস্টমাসের সময় যে স্রোত প্রবাহিত হয় তাকে বলে এল_নিনো ।



উৎপত্তিঃ এল_নিনোর ঠিক বিপরীত অবস্থা। কোনও স্বাভাবিক বছরে  পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় , নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় ও পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে তখন উচ্চচাপ বিরাজ করে।  এবং আয়নবায়ু সক্রিয়  থাকার  ফলে দখিন-পুর্ব এশিয়া সহ ইন্দোনেশিয়া অস্ট্রেলিয়ায়  প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং তখন পুর্ব  প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে খরা দেখা যায়।

সমুদ্র স্রোতের উৎপত্তিঃ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পুর্ব উপকূল অর্থাৎ পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল অঞ্চলে শীতল সমুদ্রস্রোত দেখা যায়

ওয়াকার সার্কুলেশনের অবস্থাঃ স্বাভাবিক অবস্থায় লা  নিনার  সৃষ্টি

বায়ুরচাপঃ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পুর্ব উপকূলে উচ্চচাপ ও পশ্চিম উপকূলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়

সমুদ্রজলের উষ্ণতাঃ স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি কম থাকে ।

আয়নবায়ুর অবস্থাঃ আয়নবায়ু সক্রিয়  থাকে।

মৌসুমি বায়ুর উপর প্রভাবঃ লা – নিনার প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়

বৃষ্টিপাত ও খরাঃ লা নিনার প্রভাবে অস্ট্রেলিয়া ,দক্ষিণ পুর্ব এশিয়া অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এবং পেরু ইকুয়েডর অঞ্চলে খরা সৃষ্টি হয়

সায়ন্তনী সিং 

জিওগ্রাফিয়া


 আরও পড়ুন

ত্রিকোশীয় সংবহন মডেল (Tricellular Circulation Model)

উচ্চমাধ্যমিক ২০২১ এর ভূগোল সাজেশন// WB HS GEOGRAPHY SUGGESTION 2021 ( ECONOMIC GEOGRAPHY PART) 

 উচ্চমাধ্যমিক ২০২১ এর ভূগোল সাজেশন// WB HS GEOGRAPHY SUGGESTION 2021

জেট স্ট্রীম: সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য//উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY) পঞ্চম অধ্যায়ঃবায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ //পার্ট ০২ 

উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY) পঞ্চম অধ্যায়ঃবায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ পার্ট ১ 

নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের গঠন   

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code