Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের গঠন বিন্যাস// INTERIOR STRUCTURE OF THE EARTH // WBSLST//WBMSC

 পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের গঠন বিন্যাস// INTERIOR STRUCTURE OF THE EARTH // WBSLST//WBMSC 




পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগের গঠন বিন্যাস সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুব বেশী নেই কারণ আমরা জানি  পৃথিবীর পরিধি ৬৩৭০  কিলোমিটার।  পৃথিবীর অভ্যন্তর ঠিক  কি রয়েছে, কি অবস্থায় আছে, কি কি পদার্থ দ্বারা গঠিত, গভীরতাই বা কত  সে সম্পর্কে অনুমান করা সম্ভব নয়  ভূবিজ্ঞানীরা প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষনের দ্বারা কেবলমাত্র পৃথিবীর উপরি ভাগের মাত্র কয়েক কিমি গভীরতা পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর সর্বাধিক গভীর খনি অঞ্চল মাত্র ৫ কিমি গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত। আবার Ocean Drilling এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ১২ কিমি পর্যন্ত খনন করা সম্ভব হয়েছে।


তবে , যে সব উৎস গুলি থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, সে গুলিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা – প্রত্যক্ষ  উৎস ও পরোক্ষ উৎস


 



পৃথিবীর  অভ্যন্তরীণ ভাগের বর্ণনা

প্রত্যক্ষ উৎস - যে সব উৎস থেকে আমরা সরাসরি পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ সম্পর্কে ধারণা পায়, সেগুলি কে প্রত্যক্ষ উৎস বলে। যেমন - ভূ-পৃষ্ঠীয় শিলা, খনিজ উত্তোলন, গভীর মহাসাগরীয় খনন ও অগ্ন্যুৎপাত।

পরোক্ষ উৎস হল সেগুলি যেগুলো থেকে সরাসরি আমরা পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে না পারলেও সে উৎস গুলির বিশ্লেষণ আমাদের অভ্যন্তরের গঠন বিন্যাস সম্পর্কে অনুধাবন করতে সাহায্য করে। যেমন - উল্কা বা মহাজাগতিক বস্তু, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন বল, পৃথিবীর চৌম্বকত্ব এবং ভূ-কম্পীয় তরঙ্গ।


ভূকম্পীয় তরঙ্গের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে পৃথিবীর ভূ-অভ্যন্তরের গঠন বিন্যাস সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারণা পাওয়া যায়। এই ভূকম্পীয় তরঙ্গের গতিপ্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর অভ্যন্তরকে তিনটি প্রধান স্তরে বিন্যাস করা হয়, যথা - ভূত্বক, গুরুমন্ডল ও কেন্দ্রমন্ডল।


 


পৃথিবীর অভ্যন্তরের স্তর বিন্যাস গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল


পৃথিবীর  অভ্যন্তরীণ ভাগের বর্ণনা






ভূত্বক –


 পৃথিবীর বহিঃভাগের পাতলা  শিলাময় কঠিন অংশ কে ভূত্বক বলে।

  ভূত্বক সাধারণত ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়ে থাকে।

পৃথিবীর মোট ভরের মাত্র ১% দখল করে আছে ভূত্বক। যার মধ্যে মহাদেশীয় ভূত্বকে রয়েছে ৭০% এবং মহাসাগরীয় ভূত্বকের ৩০% রয়েছে। 

পৃথিবীর ভূত্বকের ঘনত্বের ধারয়া দেন হেনরি কেভেন্দিস। 

ভূত্বকের গভীরতা ৪ কিমি থেকে ৪০ কিমি গভীরতা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবার হিমালয়ের অঞ্চলে ৭০কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত ।

ভূত্বকের তাপমাত্রা প্রধানত ৬০০ ডিগ্রি হয়ে থাকে।

এই স্তরে প্রধানত সিলিকা(২৮.২%), অ্যালুমিনিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত।.

সর্বাধিক রাসায়নিক উপাদান ভূত্বকে রয়েছে তা হল অক্সিজেন (৪৬.১%) 

সর্বাধিক খনিজ উপাদান হল ফেল্ডস্পার (৬০%) যার মধ্যে মহাদেশীয় ভূত্বকে রয়েছে ৪১% , 

ভূগঠনকারী পদার্থের তারতম্যের ওপর ভিত্তিক করে ভূত্বক কে প্রধানত দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে - মহাদেশীয় ভূত্বক ও মহাসাগরীয় ভূত্বক।


Ø  মহাদেশীয় ভূত্বক - পৃথিবীর উপরিভাগের মহাদেশীয় অংশ নিয়ে গঠিত হয় মহাদেশীয় ভূত্বক।

Ø  এই মহাদেশীয় ভূত্বকের গড় গভীরতা ৬০ কিমি।

Ø  মহাদেশীয় ভূত্বক প্রধানত গ্রানাইট জাতীয় শিলা দ্বারা গঠিত এবং অম্ল প্রকৃতির হয়। 

Ø  এতে সিলিকা ও অ্যালুমিনিয়াম খনিজের প্রাধান্য থাকায় মহাদেশীয় ভূত্বক কে সিয়াল বলা হয়ে থাকে।

Ø  মহাদেশীয় ভূত্বক বরাবর পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূখণ্ডের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।

Ø  এই ভূত্বকের ঘনত্ব হয় ২.৭ গ্রাম/ঘনসেমি।

👉 P তরঙ্গের মান ৬.১ কিমি/ সেকেন্ড 

👉 প্রাচীনতম মহাদেশীয় ভূত্বক তৈরি ৪৩০ কোটি বছর আগে। 

👉 মহাদেশীয় ভূত্বকের ধারনা দেন ওয়েগনার (১৯১২) 

👉মহাদেশীয় ভূত্বক ও মহাসাগরীয় ভূত্বকের ধারনা দেন এডঅয়ার্ড সুয়েস । 



মহাসাগরীয় ভূত্বক –

Ø  মহাসাগরের তলদেশ দ্বারা যে ভূ-ত্বকীয় অংশ গঠিত হয়, তাকে মহাসাগরীয় ভূত্বক বলে।

Ø  মহাসাগরীয় ভূত্বক  সাধারণত ভারী ও কালো রঙের ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এবং ক্ষারীয় প্রকৃতির 

Ø  এই শিলায় সিলিকা ও ম্যাগনেসিয়ামের আধিক্য থাকায় মহাসাগরীয় ভূত্বক কে সিমা বলা হয়ে থাকে।

Ø  মহাদেশীয় ভূত্বকের গড় গভীরতা প্রায় ৭-১০ কিমি এবং ঘনত্ব প্রায় ৩ গ্রাম/ঘনসেমি হয়ে থাকে।

Ø  এই ধরণের ভূত্বক বরাবর পৃথিবীর নবীনতম ভূত্বকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

Ø  পৃথিবীর মোট ভূত্বকের প্রায় ৬০-৭০% দখন করে আছে এই মহাদেশীয় ভূত্বক।

👉P তরঙ্গের মান ৬.৯ কিমি/ সেকেন্ড.

👉প্রাচীনতম মহাসাগরীয় ভূত্বক হল পুর্ব ভুমধ্যমহাসাগর 



গুরুমন্ডল –

Ø  ভূত্বকের নিচের স্তরটি হল গুরুমন্ডল।

Ø  গুরুমন্ডল পৃথিবীর অভ্যন্তরে ২৯০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং মোট আয়তনের প্রায় ৮৪% এই গুরুমন্ডলের অন্তর্গত।

Ø পৃথিবীর মোট ভরের ৬৮%  গুরুমন্ডলের অন্তর্গত। 

Ø  গুরুমন্ডলের উপরের অংশ থেকে যত নীচের দিকে যাওয়া যায় তাপমাত্রা ও ঘনত্ব ততই বাড়তে থাকে বলে, উপরের অংশ এবং নীচের অংশের পদার্থ গুলির মধ্যে প্রকৃতিগত পরিবর্তন দেখা যায়।

Ø  গুরুমন্ডলের গড় ঘনত্ব প্রায় ৩.৩ গ্রাম/ঘনসেমি থেকে ৫.৫ গ্রাম/ঘনসেমি।

Ø ভূত্বক এবং গুরুমন্ডলের উপরের অংশকে একত্রে শিলামন্ডল বলে। 

Ø  গুরুমন্ডলের বেশির ভাগ অংশ মূলত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত এবং এখানে সিলিকা জাতীয় পেরিডোটাইট শিলা, যেমন - অলিভিন, পাইরক্সিন, গারনেট জাতীয় শিলা এবং খনিজ পদার্থ রূপে লোহা ও ম্যাগনেসিয়ামের প্রাধান্য রয়েছে।

Ø  এই স্তর ক্রোমিয়াম, লোহা, সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত। 

Ø 

Ø তাপমাত্রা ২০০০- ৩০০০ ডিগ্রি হয়ে থাকে 


গুরুমন্ডল কে সাধারণত দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করা যায় –।

 ১) ঊর্ধ্ব গুরুমন্ডল - এই স্তরটি শিলামন্ডলের নিম্ন অংশ থেকে ১০০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। ঊর্ধ্ব গুরুমন্ডলের সবচেয়ে উপরের অংশটি কঠিন, যা ভূত্বক কে সঙ্গে নিয়ে শিলামন্ডল গঠন করেছে  এবং নিম্ন অংশ  যা নরম সান্দ্র প্রকৃতির, যাকে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার বলে। ঊর্ধ্ব গুরুমন্ডলের নিম্নাংশে তাপমাত্রার উপস্থিতি এই অংশে পরিচলন স্রোত সৃষ্টি হতে সাহায্য করে, যা পাতের সঞ্চালনে গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন করে। মোহো বি্যুক্তিরেখা থেকে ৪১০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত স্তরকে গুটেনবার্গ স্তর বলে। এবং ৪১০ কিমি থেকে ১০০০ কিমি গভীরতা পর্যন্ত স্তরকে গলিস্তাইন স্তর বলে।গুটেনবার্গ স্তরের অন্তগর্ত ১০০-২০০ কিমি গভীরতায় ভূকম্পন তরঙ্গের গতিবেগ হ্রাস  পাওয়ায় , এই স্তরকে Zone of Low Velocity বলে।  ঘনত্ব ৩.৪ - ৪.৫ গ্রাম/সেমি 3 . 

২ ) নিম্ন গুরুমন্ডল -  নিম্ন গুরুমণ্ডল ১০০০ কিলোমিটার ২৯০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। যা গুরুমণ্ডলের শেষ সীমা নির্দেশ করে। গুরুমণ্ডলের অন্যান্য অংশের তুলনায় এই অংশের উষ্ণতা ও ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। অত্যাধিক চাপের জন্য নিম্ন গুরুমণ্ডলের পদার্থ সমূহ কঠিন অবস্থায় রয়েছে।ঘনত্ব ৪.৫-৫.৫ গ্রাম/ ঘনসেমি। 



কেন্দ্রমন্ডল

  1. পৃথিবীর সর্বনিম্ন স্তরটি হল কেন্দ্রমন্ডল।
  2.  কেন্দ্রমন্ডলের পরিধি প্রায় ৩৩৬০ কিমি এবং এটি মূলত লোহা ও নিকেল দ্বারা গঠিত। তাই কেন্দ্রমন্ডল কে নিফে বলা হয়। 
  3. কেন্দ্রমন্ডলের তাপমাত্রা প্রায় ৬৯০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঘনত্ব প্রায় ১০ থেকে ১৩ গ্রাম/ঘনসেমি। 
  4. পৃথিবীরর মোট আয়তন ও ভর যথাক্রমে ১৬% এবং ৩২% অধিকার করে রয়েছে। 
  5. পৃথিবীর কেন্দ্রে চাপের পরিমাণ ৩৫০০ কিলোবার। 


·         বহিঃকেন্দ্রমন্ডল - গুরুমন্ডলের নিম্নস্তর ২৯০০ থেকে ৫১৫০  কিলোমিটার গভীরতা পর্যন্ত বিস্তৃত  কেন্দ্রমণ্ডলের যে অংশটি তরল অবস্থায় রয়েছে, তাকে বহিঃস্থ কেন্দ্রমন্ডল বলে। পৃথিবীর চৌম্বকত্ব এই বহিঃকেন্দ্রমন্ডলেই সৃষ্টি হয়েছে।


·         অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল - বহিঃস্থ কেন্দ্রমন্ডলের নীচের অংশটি অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীদের মতে এই অংশটি কঠিন অবস্থায় রয়েছে কারণ  প্রবল চাপের উপস্থিতির জন্য এই স্তরের পদার্থ গুলির গলনাঙ্ক উপস্থিত তাপমাত্রার থেকে অনেক বেড়ে গেছে, তাই প্রচণ্ড উষ্ণতা থাকা সত্ত্বেও এই অংশটি কঠিন অবস্থায় আছে।


·        কনরাড বিযুক্তি রেখা - ভূত্বকের সিমা স্তর ও সিয়াল স্তরের মধ্যে যে বিযুক্তিরেখা রয়েছে, তাকে কনরাড বিযুক্তি রেখা বলে। কারণ বিজ্ঞানী কনরাড ১৯২৫ সালে এই বিযুক্তিরেখা টি আবিষ্কার করেন।


·        মোহরোভেসিক বিযুক্তিরেখা - ১৯০৯ সালের ক্রোয়েসিয়া ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ভূকম্পীয় তরঙ্গের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যান্ড্রিজা মোহরোভেসিক ভূত্বক ও গুরুমন্ডলের মধ্যে যে বিযুক্তিরেখা  আবিষ্কার করেন, তাকে মোহরোভেসিক বিযুক্তিরেখা।


·        ৬৬০ কিলোমিটার গভীরতা বরাবর অবস্থিত রেপিত্তি বিযুক্তিরেখা গুরুমন্ডলের অন্তর্গত পরিবর্তনশীল অঞ্চল ও নিম্ন গুরুমন্ডলকে পৃথক করেছে। 


·        গুরুমন্ডল ও কেন্দ্রমন্ডলের মাঝে রয়েছে গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা।


·        ৫১০০ কিলোমিটার গভীরতা অবস্থিত বহিঃকেন্দ্রমন্ডল ও অন্তঃকেন্দ্রমণ্ডলের সংযোগস্থল লেহম্যান বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত।

READ MORE 

GEOGRAPHY IMPORTANT QUESTION SERIES CLICK HERE 

WBSLST GEOGRAPHY 2016 IX-X CLICK HERE 
GEOLOGICAL TIME SCALE CLICK HERE 

CTET PEDAGOGY CLICK HERE 

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code