পৃথিবীর গোলাকার আকৃতির স্বপক্ষে প্রমাণঃ// Proof of Shape of the Earth
(১) মহাকাশ থেকে পৃথিবীর আকৃতি ও অন্যান্য গ্রহের আকৃতি :
কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর যে ছবি তোলা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর আকৃতি গোল। পৃথিবী ছাড়া বাকী গ্রহগুলোকেও গোলাকার দেখায়। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে সৌরজগতের সকল গ্রহগুলির মতো পৃথিবীও গোল।
(২) গোলাকার ছায়া : চন্দ্রগ্রহনের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর গোলাকার ছায়া পড়ে। কোন গোলাকার বস্তুর ছায়া গোলাকার-ই হয়। সুতরাং পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার।
(৩) গোলাকার গ্রহ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে সৌরজগতের সব গ্রহকে গোলাকার দেখায়। পৃথিবী সৌরজগতের একটি গ্রহ। সুতরাং, পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার হওয়াই স্বাভাবিক।
(8) গোলাকার সমুদ্রপৃষ্ঠ :- পৃথিবী সমতল হলে সমুদ্রগামী বা তীরগামী কোন জাহাজের সমগ্র অংশ একসঙ্গে দেখা যেত বা অদৃশ্য হত। কেবল দূরত্ব অনুযায়ী বড় বা ছোট দেখাত। কিন্তু সমুদ্রগামী কোন জাহাজের প্রথমে নিচের অংশ পরে ছাদ ও মাসুল এবং শেষে। পুরো জাহাজটাই চোখের সামনে অদৃশ্য হয়। গোলাকার পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের জন্যই এরূপ ঘটে। সুতরাং, পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার।
(৫) ভূ-পৃষ্ঠের সব একই সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয় না। পৃথিবী সমতল হলে ভূ-পৃষ্ঠের সর্বত্র একই সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হত। পৃথিবী গোলাকার বলেই পূর্বের দেশগুলিতে আগে ও পশ্চিমের দেশগুলিতে পরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়।
(৬) নির্দিষ্ট স্থান থেকে নির্দিষ্ট দিকে চললে পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট স্থান থেকে জাহাজ বা বিমানে নির্দিষ্ট দিকে দিক পরিবর্তন না করে চলতে থাকলে একই স্থানে ফিরে আসতে হয়। পৃথিবী গোলাকার বলেই এরূপ সম্ভব হয়।
(৭) দিগন্তরেখা : কোন উঁচু জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ ও ভূমি যেন এক জায়গায় বৃত্তাকারে মিলিত হয়েছে। এই বৃত্তরেখাকে দিগন্তরেখা বলে। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে যতই ওপরে ওঠা যায় দিগন্তরেখার পরিধিও তত বেড়ে যায়। পৃথিবী গোলাকার বলেই এরূপ সম্ভব হয়।
(৮) বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষা ১৮৭০ সালে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড খালে এ.আর. ওয়ালেস নামে এক পর্যবেক্ষক পৃথিবীর গোলাকৃতি সম্পর্কে এক পরীক্ষা করেন। তিনি ওই খালে ১ কি.মি. অন্তর তিনটি সমান দৈর্ঘ্যের গুটি একই সরলরেখায় খালের সির জলে ভেলার সাহায্যে ভাসিয়ে দূরবীক্ষণ যন্ত্রে দেখলেন মাঝের খুঁটির মাথা প্রথম ও তৃতীয় গুটি অপেক্ষা সামান্য উঁচু রয়েছে। পৃথিবী গোলাকার বলেই মাঝের খুঁটির মাথা এরূপ উঁচু হয়।

0 Comments