উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY)
পঞ্চম অধ্যায়ঃবায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ
নমস্কার , উচ্চমাধ্যমিক ভূগোল ( WB HS GEOGRAPHY): সকল ছাত্র ও ছাত্রীকে জানাই জিওগাফিয়াতে স্বাগতম। আজকে এই ব্লগে আমি মূলত তোমাদের পঞ্চম অধ্যায়ের বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ থেকে কিছু পার্থক্য যা ২০২১ সালের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন। আশা করি তোমাদের সাহায্য হবে। পার্ট ১
১. এল নিনো ও লা নিনা এর মধ্যে পার্থক্য
বিষয় |
এল নিনো |
লা নিনা |
অর্থ |
এল নিনো কথাটি স্প্যানিশ
শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ ছোটো ছেলে । |
লা নিনা কথাটি স্প্যানিশ
শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ ছোটো মেয়ে । |
সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি |
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের
পুর্ব উপকূল অর্থাৎ পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল অঞ্চলে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত দেখা যায় |
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের
পুর্ব উপকূল অর্থাৎ পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল অঞ্চলে শীতল সমুদ্রস্রোত দেখা যায় |
ওয়াকার সার্কুলেশনের অবস্থা |
বিপরীত মুখী অবস্থায়
এল নিনোর সৃষ্টি |
স্বাভাবিক অবস্থায়
লা নিনার সৃষ্টি |
বায়ুরচাপ |
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের
পুর্ব উপকূলে নিম্নচাপ ও পশ্চিম উপকূলে উচ্চচাপ সৃষ্টি হয় |
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের
পুর্ব উপকূলে উচ্চচাপ ও পশ্চিম উপকূলে নিম্নচাপ
সৃষ্টি হয় |
সমুদ্রজলের উষ্ণতা |
স্বাভাবিকের থেকে
১ – ৫ ডিগ্রি বেশী থাকে |
স্বাভাবিকের থেকে
৪ ডিগ্রি কম থাকে । |
আয়নবায়ু |
আয়নবায়ু দুর্বল থাকে
|
আয়নবায়ু সক্রিয় থাকে।
|
মৌসুমি বায়ুর উপর প্রভাব |
এল নিনোর প্রভাবে
দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেরিতে আসে এবং বৃষ্টিপাত কম হয় |
লা – নিনার প্রভাবে
প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় |
বৃষ্টিপাত ও খরা |
এল নিনোর প্রভাবে
অস্ট্রেলিয়া ,দক্ষিণ পুর্ব এশিয়া অঞ্চলে খরা সৃষ্টি হয় । পেরু ইকুয়েডর অঞ্চলে বৃষ্টিপাত
হয় |
লা নিনার প্রভাবে
অস্ট্রেলিয়া ,দক্ষিণ পুর্ব এশিয়া অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এবং পেরু ইকুয়েডর অঞ্চলে
খরা সৃষ্টি হয় |
২. উষ্ণ সীমান্ত ও শীতল সীমান্তের পার্থক্য
বিষয় |
উষ্ণ সীমান্ত |
শীতল সীমান্ত |
সংজ্ঞা |
উষ্ণ বায়ু , শীতল
বায়ুকে যে তল বরাবর স্থানচ্যুত করে তাকে উষ্ণ সীমান্ত বলে। |
শীতল বায়ু উষ্ণ বায়ুকে
যে তল বরাবর স্থানচ্যুত করে তাকে শীতল সীমান্ত
বলে। |
সীমান্তের প্রকৃতি |
তির্যক প্রকৃতি |
উত্তল হয়ে থাকে |
ঢাল |
মৃদু ঢাল |
অপেক্ষাকৃত বেশী ঢাল
। ১০০ মিটার হয়ে থাকে |
তাপ ও চাপ |
বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধি
পাওয়াতে চাপ হ্রাস পায় |
বায়ুর উষ্ণতা কম হওয়ায়
বায়ুর চাপ বেশী হয়। |
বৃষ্টিপাত |
কম হয় |
বেশী হয় |
আবহাওয়া |
বজ্র বিদ্যুৎ সহ ঝড়
বৃষ্টি কম হয় |
প্রচুর বজ্র বিদ্যুৎ
সহ ঝড় বৃষ্টি হয় |
মেঘের সঞ্চার |
সিরাস , ওল্টোস্ট্র্যাটাস
ও নিম্বো স্ট্র্যাটাস মেঘের সঞ্চার হয় । |
কিউমুলোমিম্বাস মেঘের সঞ্চার হয়। |
৩. ক্রান্তীয় ঘূর্নবাত ও নাতিশীতোষ্ণ
ঘূর্নবাতের পার্থক্য
বিষয় |
ক্রান্তীয় ঘূর্নবাত |
নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্নবাত |
সংজ্ঞা |
নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ৫º থেকে ২৩১/২ º অক্ষরেখা বরাবর কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি
রেখার মাঝে যে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় তাকে ক্রান্তীয় ঘূর্নবাত বলে। |
উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ৩৫º থেকে ৬৫º অক্ষাংশে দুই বিপরীতধর্মী বায়ুর ( মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ু এবং ক্রান্তীয়
অঞ্চল থেকে আগত উষ্ণ – আর্দ্র বায়ু ) সংঘর্ষে উষ্ণবায়ু সীমান্ত বরাবর শীতলবায়ুর উপর প্রবল বেগে উপরে উঠে যায় একে নাতিশীতোষ্ণ
ঘূর্নবাত বলে। |
অবস্থান - |
নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ৫º থেকে ২৩১/২ º অক্ষাংশের মধ্যে সংঘটিত হয়। |
উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে
৩৫º থেকে ৬৫º অক্ষাংশের মধ্যে সংঘটিত হয়। |
ব্যাস |
১০০ কিমি থেকে ৭০০ কিমি পর্যন্ত হয়। |
২০০ কিমি থেকে ৩০০০ কিমি পর্যন্ত হয় |
বিস্তার |
অপেক্ষাকৃত ছোটো। উল্লম্ভ
গভীরতা বেশী |
অপেক্ষাকৃত বড় । উল্লম্ভ
গভীরতা অপেক্ষাকৃত কম। |
উৎপত্তিস্থল
|
সমুদ্রর উপর |
স্থল বা ভুমিভাগের উপর |
উৎপত্তি সময় |
গ্রীষ্ম ও শরত কাল |
শীতকাল |
উৎপত্তি |
নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ৫º থেকে ২৩১/২ º অক্ষরেখা বরাবর কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মধ্যবর্তী
অঞ্চলে সমুদ্রজল অধিক উষ্ণ হওয়ার জন্য বায়ু উষ্ণ ও হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়
ফলে ঐ জায়গাতে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়
। তখন চারপাশের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু প্রবল বেগে কুণ্ডলী আকারে ঘুরতে ঘুরতে
নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে। |
দুই বিপরীতধর্মী বায়ুর ( মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ু এবং ক্রান্তীয় অঞ্চল
থেকে আগত উষ্ণ – আর্দ্র বায়ু ) সংঘর্ষে উষ্ণবায়ু সীমান্ত বরাবর শীতলবায়ুর উপর প্রবল বেগে উপরে উঠে যায়। |
গতিবেগ |
৫০ থেকে ৪০০ কিমি |
৩০ থেকে ৩৫ কিমি |
দিক |
সমুদ্র থেকে স্থল্ভাগের দিকে প্রবাহিত
হয় |
পশ্চিমা বায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। পশ্চিম থেকে পুর্বে প্রবাহিত হয় |
স্থায়িত্ব |
স্বল্প সময় |
দীর্ঘ সময় |
তীব্রতা |
বিধ্বংসী |
অপেক্ষাকৃত কম |
|
|
|
৪. ঘূর্ণবাত ও প্রতীব ঘূর্ণবাতের পার্থক্য
বিষয় |
ঘূর্ণবাত |
প্রতীব ঘূর্ণবাত |
ধারণাঃ |
কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে
স্বল্প পরিসর স্থানে তাপমাত্রা হঠাত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।
বায়ুচাপের সমতা বজায় রাখার জন্য আশপাশের শীতল বায়ু কালক্রমে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে
ছুটে আসে এবং উষ্ণ বায়ু উর্দ্ধগামী হয় এই বায়ুকে ঘূর্ণবাত বলে। |
মেরু অঞ্চল ও নাতিশীতোষ্ণ
অঞ্চলে কোনও স্থানের তাপমাত্রা অধিক শীতল হওয়ার কারণে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় ফলে বায়ু
কেন্দ্রের বাইরের দিকে অর্থাৎ নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। একে প্রতীব ঘূর্ণবাত বলে। |
প্রকৃতি |
ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে
থাকে নিম্নচাপ। |
প্রতীব ঘূর্ণবাতের
কেন্দ্রে থাকে উচ্চচাপ। |
বায়ুর দিক |
শীতল বায়ু বাহিরে
থেকে কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে |
শীতল বায়ু বাহিরের
দিকে কেন্দ্রের থেকে ছুটে যায়। |
বায়ুর প্রকৃতি |
উষ্ণ ও উর্দ্ধমুখী
বায়ু |
শীতল ও আধোমূখী বায়ু |
ঘূর্ণণের দিক |
উত্তর গোলার্ধে বামদিকে
বেঁকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ডানদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়। |
উত্তর গোলার্ধে ডানদিকেবেঁকে
এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকেবেঁকে প্রবাহিত
হয়। |
গতিবেগ |
মাঝারি থেকে তীব্র |
ধীর গতি সম্পন্ন |
বৃষ্টিপাত |
প্রচুর বৃষ্টি |
বৃষ্টি হয়না |
মেঘাচ্ছন্নতা |
মেঘে পরিপূর্ন |
রোদে ঝলমল করে। |
স্থায়িত্ব |
কম সময়ের জন্য স্থায়ী |
দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়। |
0 Comments