Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ করে সংক্ষেপে আলোচনা করো । // write the types of springs//wb//hs//2024

 প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ করে সংক্ষেপে আলোচনা করো । // write the types of springs//wb//hs//2024

Ans:ভূপৃষ্ঠের কোন দুর্বল অংশ বা ফাটল দিয়ে ভূগর্ভস্থ জলের স্বাভাবিক নির্গমনকে প্রস্রবণ বলে। প্রকৃতি অনুযায়ী প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ : জলের উপাদান , উয়তা , স্থায়িত্ব প্রভৃতি প্রকৃতি অনুযায়ী প্রস্রবণকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা হয় । যথা – 

A.স্থায়িত্ব অনুসারে: স্থায়িত্ব অনুসারে প্রস্রবণ দুই প্রকার—

(i)অবিরাম প্রস্রবণ

(ii)অবিরাম প্রস্রব

B.উষ্ণতা অনুসারে: উষ্ণতা অনুসারে প্রস্রবণ 3 প্রকার–

(i)শীতল প্রস্রবণ

(ii)উষ্ণ প্রস্রবণ

(iii) গিজার


 C.খনিজ উপাদান অনুসারে: খনিজ উপাদান অনুসারে প্রস্রবণ 2 প্রকার—

(i)খনিজ প্রস্রবণ

(ii)স্বাদু জলের প্রস্রবণ


D.গঠন অনুসারে প্রস্রবণ: গঠন অনুসারে প্রস্রবনের শ্রেণীবিভাগ

i)সমান্তরাল প্রস্রবণ

ii) ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ

iii) নতিঢাল প্রস্রবণ

iv) চ্যুতি ও দারন প্রস্রবণ

v)ডাইক প্রস্রবণ

vi)ভ্যক্লুশন প্রস্রবণ

vii)আর্টেজীয়কূপ বা প্রস্রবণ



স্থায়িত্ব অনুসারে : স্থায়িত্ব অনুসারে প্রস্রবণকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন— 

( ক ) অবিরাম প্রস্রবণ : সারাবছর যেসব  প্রস্রবণ থেকে নিয়মিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল বেরিয়ে আসে , তাকে অবিরাম প্রস্রবণ বলে ।প্রবেশ্য ও অপ্রবেশ্য  শিলার সংযোগস্থলে অবস্থিত স্থায়ী সম্পৃক্ত স্তর ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হয়ে পড়লে অবিরাম প্রস্রবণের সৃষ্টি হয়।

উদাহরণঃ শোন নদীতে অবস্থিত সোনামুড়া প্রস্রবণ হলো অবিরাম প্রস্রবণের উদাহরণ।

( খ ) সবিরাম প্রস্রবণ : শুধুমাত্র বর্ষা বা আর্দ্র ঋতুতে যেসব প্রস্রবণ থেকে জল নির্গত হয় , অন্য সময় প্রস্রবণ শুকিয়ে যায় , তাকে সবিরাম প্রস্রবণ বলে । প্রস্রবনের ছিদ্রপথ সাময়িক সম্পৃক্ত স্তরের সঙ্গে যুক্ত থাকলে এই ধরনের প্রস্রবণ সৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট সাময়িক সম্পৃক্ত স্তরের ছিদ্রের মাধ্যমে ভৌমজল বেরিয়ে আসে বলে এই ধরনের প্রস্রবণগুলিতে বর্ষাকালে জল নির্গত হয়। কিন্তু অন্যান্য ঋতুতে বিশেষত শীতকালে ওই সাময়িক সম্পৃক্ত স্তরে জল-সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বলে এই ধরনের প্রস্রবণগুলি থেকে জল নির্গত হয় না।

উদাহরণঃ ঝাড়খণ্ডের চাইবাসার লুপুঙগুটু প্রস্রবণ হল সবিরাম প্রস্রবণের উদাহরণ।


উন্নতা অনুযায়ী : উয়তা অনুযায়ী প্রস্রবণকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে । যথা : 

( ক ) উষ্ণ  প্রস্রবণ : ভৌমজল অনেক গভীরে পৌঁছালে ভূগর্ভের তাপে তা উত্তপ্ত হয় । এই উষ্ণ  জল ( > 98 ° F ) ভূপৃষ্ঠের কোনো ছিদ্র বা ফাটল দিয়ে নির্গত হয় । এই জলধারাকে উষ্ণ প্রস্রবণ বলা হয় । যথা– পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বর ।  এছাড়াও উত্তরাখণ্ডের গৌরীকুণ্ড ইত্যাদি হল উষ্ণ প্রস্রবণের উদাহরণ।

( খ ) গিজার ও গাইজার : অনেকসময় উয় প্রস্রবণের জল ও বাষ্প নিয়মিতভাবে কিছুক্ষণ পর পর স্তম্ভাকারে ওপর দিয়ে প্রবল বেগে উৎক্ষিপ্ত হয় । এদের গিজার বলে । যেমন— আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইউলোস্টোন পার্কের ওল্ড ফেথফুল গিজার । 

( গ ) শীতল প্রস্রবণ : অনেকসময় যে প্রস্রবণ থেকে শীতল জল নির্গত হয় , তাকে শীতল প্রস্রবণ বলে । উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের কাছে সহস্রধারা  এবং মুসউরি  প্রস্রবণটি শীতল প্রস্রবণের উদাহরণ । 



খনিজ উপাদান অনুসারে : এটি দু’ভাগে বিভক্ত । যথা— 

( ক ) খনিজ প্রস্রবণ : অনেক প্রস্রবণের জলে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ যেমন— লবণ , লোহা যৌগ , সালফার যৌগ ইত্যাদি দ্রবীভূত থাকে , এদের খনিজ প্রস্রবণ বলে । যেমন — বক্রেশ্বর বা রাজগিরের প্রস্রবণ খনিজ প্রস্রবণ । 

( খ ) স্বাদুজলের প্রস্রবণ : যেসব প্রস্রবণের জলে দ্রাব্য খনিজ পদার্থের পরিমাণ লিটার প্রতি 1 গ্রামের কম তাদের স্বাদু জলের প্রস্রবণ বলে।উদাহরণঃ দেরাদুনের সহস্রধারা হল এই ধরনের প্রস্রবণ।


গঠন অনুসারে প্রস্রবণের শ্রেণিবিভাগ : 

i)সমান্তরাল প্রস্রবণঃ ভূপৃষ্ঠের কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সমান্তরালভাবে একাধিক প্রস্রবণ গড়ে উঠলে, তাকে সমান্তরাল প্রস্রবণ বলে। প্রধানত পার্বত্য অঞ্চলে একাধিক সমান্তরাল প্রবেশ্য শিলাস্তরের সঙ্গে সমান্তরাল  অপ্রবেশ্য শিলাস্তর যেখানে মিলিত হয়, সেই সংযোগস্থলে যদি ফাটল সৃষ্টি হয়,তাহলে ভু-গর্ভস্থ জল সমান্তরাল ভাবে বেরিয়ে আসে। 

ii) ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণঃ ভৃগুতটের পাদদেশে বিশেষত চুনাপাথর বা চক দিয়ে গঠিত অঞ্চলের প্রবেশ্য(চুনাপাথর)ও অপ্রবেশ্য(কাদাপাথর) শিলার সংযোগস্থল উন্মুক্ত হলে যে প্রস্রবণের সৃষ্টি হয় তাকে ভৃগুতট পাদদেশ প্রস্রবণ বলে।

iii) নতিঢাল প্রস্রবণঃ শিলাস্তর অনুভূমিক তলের সঙ্গে যে কোণে হেলে থাকে, তাকে নতি বলে। প্রধানত পার্বত্য অঞ্চলে প্রবেশ্য অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের নতির ঢাল বরাবর যদি ফাটল বা দারন সৃষ্টি হয়, তাহলে ওই ফাটল বা দারুন বরাবর শিলাস্তর উন্মুক্ত হয়ে যে প্রস্রবণ সৃষ্টি হয়, তাকে নতিঢাল প্রস্রবণ বলে।


iv) চ্যুতি ও দারন প্রস্রবণ:চ্যুতি ও দারণের ফলে যদি প্রবেশ্য শিলাস্তর অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের উপরে উঠে আসে তখন ভিন্ন দুটি স্তরের সংযোগস্থল উন্মুক্ত হয়ে যে প্রস্রবণের সৃষ্টি হয় তাকে চ্যুতি বা দারুন প্রস্রবণ বলে।

v)ডাইক প্রস্রবণঃকোন ডাইক প্রবেশ্য শিলাস্তরকে ছেদ করলে যে প্রস্রবনের সৃষ্টি হয় তাকে ডাইক প্রস্রবণ বলে 

vi)ভ্যক্লুশন প্রস্রবণঃ চুনাপাথর ও ডলোমাইট দ্বারা গঠিত অঞ্চলে ভৌমজল ভূগর্ভ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কোন ফাটল বরাবর ভূপৃষ্ঠে নির্গত হলে যে প্রস্রবণ সৃষ্টি হয়, তাকে ভ্যক্লুসিয়ান প্রস্রবণ বলে। প্রধানত চুনাপাথর ও ডলোমাইট দ্বারা গঠিত অঞ্চলে বৃষ্টির জল সহজেই শিলাস্তরে প্রবেশ করে ক্ষয়কার্য শুরু করে। এর ফলে ফাটল ক্রমশ প্রশস্ত হতে থাকে। চুনাপাথরের নিচে যদি কোনো অপ্রবেশ্য  শিলাস্তর থাকে তাহলে ওই প্রবেশ্য  অপ্রবেশ্য শিলাস্তরের সংযোগস্থল বরাবর প্রসারিত ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভের জল প্রবল বেগে বাইরে বেরিয়ে আসে। এইভাবে ভ্যক্লুসিয়ান প্রস্রবণ সৃষ্টি হয়।

উদাহরণঃ ফান্সের রোন উপত্যকার "ফন্টেন দ্য ভ্যক্লুস" প্রস্রবণ এভাবে সৃষ্টি হয়েছে বলে পৃথিবীর সর্বত্রই এই ধরনের প্রস্রবণগুলিকে ভ্যক্লুসিয়ান প্রস্রবণ  বলে।


vii)আর্টেজীয়কূপপ্রস্রবণঃ ভূ-অভ্যন্তরের ভৌমজল তার নিজের চাপে বা আপনা আপনি বাইরে বেরিয়ে এলে প্রস্রবন সৃষ্টি হয়।

 


Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code