ভাঁজ // সংজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রক এবং ভাঁজ সৃষ্টির প্রক্রিয়াসমূহ
সাধারণত ভূ আলোড়নের ফলে পাললিক শিলাস্তরে পার্শ চাপের কারণে যে একাধিক তরঙ্গের মতো বাঁকের সৃষ্টি হয় তাকেই ভাঁজ বলা হয়ে থাকে। ভাঁজ সৃষ্টিতে গিরিজনি আলোড়ন ক্রিয়াশীল হয়ে থাকে। সাধারণত অভিসারী পাত সীমানায় ভাঁজ সৃষ্টির মাধ্যমে হিমালয় ও রকি পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে
সংজ্ঞাঃ অভিসারী পাত সীমানায় পরস্পর পাতের সঞ্চালনের কারণে সংকোচন বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে শিলাস্তরের তরঙ্গায়িত অবস্থা সৃষ্টি হলে \তাকে ভাঁজ বলে।
ভাঁজ সৃষ্টির নিয়ন্ত্রকসমূহ
১. তাপ ও চাপ সহনশীলতার মাত্রা
২.পাতের সংনমন বলের পার্থক্য
৩. শিলার দৃঢ়তা , স্থিতিস্থাপকতা এবং কাঠিন্যতা
৪. সংকোচন বলের প্রভাবে চাপ ও তাপের তীব্রতা এবং ক্রিয়াশীলতার সময়সিমা
ভাঁজ সৃষ্টির প্রক্রিয়াসমূহ
ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে চাপ ও টানের ফলে ভাঁজের উৎপত্তি। যেসব শিলার প্রকৃতি দৃঢ় তার প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশী তাই চাপ ও টানের প্রভাবে সহজে ভাঁজ প্রাপ্ত হয় না। অন্যদিকে অদৃঢ় প্রকৃতির শিলার যখন টান ও সংনমন বিপরীত অবস্থায় একই তলে কার্যকরী হয় তখন শিলায় তরঙ্গের মত উদ্ধভঙ্গ ও অধোভঙ্গ ভাঁজের উৎপত্তি হয়।
ভাঁজ সৃষ্টির প্রক্রিয়াগুলি প্রধানত তিনভাগে বিভক্ত করা যায়-
১) প্রবাহ ভাঁজ প্রক্রিয়া
২) ফ্লেক্সার ভাঁজ প্রক্রিয়া
৩) ছিন্ন ভাঁজ প্রক্রিয়া
১) প্রবাহ ভাঁজ প্রক্রিয়া
-----> সংকোচন বলের প্রভাবে উৎপন্ন তাপ ও চাপের কারণে কোমল শিলাস্তরে পদার্থগুলি সামান্য প্রবাহ ঘটে থাকে। ফলে ভাঁজের বাহুর শিলাস্তরের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায় এবং উদ্ধভঙ্গ ও অধঃভঙ্গের পদার্থগুলি সংঘবদ্ধ হয়ে শিলাস্তরের বেধ বৃদ্ধি করে।
২) ফ্লেক্সার ভাঁজ প্রক্রিয়া
------> ভূপৃষ্ঠের অনমনীয় শিলাস্তরের ভাঁজের সৃষ্টি হলে সেখানে অসংখ্য ফাটল তৈরি হয়। উদ্ধভঙ্গের ফাটলগুলি আয়তনে প্রসারিত এবং অধভঙ্গের ফাটলগুলি সংকুচিত হওয়ার ফলে শিলাস্তর অত্যন্ত কম স্থান জুড়ে বিন্যস্ত থাকে।
৩) ছিন্ন ভাঁজ প্রক্রিয়া
-----> ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরের সৃষ্ট অসংখ্য সমান্তরাল ফাটল বরাবর শিলাখন্ড বিছিন্ন হয়ে গিয়ে মধ্যবর্তী অংশ থেকে দুইদিকে ক্রমাগত অবনমিত হতে থাকার ফলে ভুমিভাগ ভাঁজ প্রাপ্ত হয়।

0 Comments