নবম শ্রেণীর ভূগোল – পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় (তৃতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | WB Class 9 Geography// 3rd chapter
সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্তকাকে বলে?
উঃ পৃথিবীর অক্ষের দুই প্রান্তকে মেরু বলে, অর্থাৎ উত্তর মেরুকে সুমেরু এবং দক্ষিণ মেরুকে কুমেরু বলা হয়। এই দুই মেরুতে পর্যায়ক্রমিকভাবে একটানা 6 মাস দিন ও একটানা 6 মাস রাত চলে।
দ্রাঘিমারেখা কী?
উঃ ভূ-পৃষ্ঠের যে সব স্থানের দ্রাঘিমা সমান বা একই, সেই সব স্থানকে কোনো কাল্পনিক রেখা দ্বারা পরপর যুক্ত করলে যে রেখা পাওয়া যায় তাকেই দ্রাঘিমারেখা বলে।
কোনো দেশ স্থানীয় সময়ের পরিবর্তে প্রমাণ সময়কে কি বলে?
উঃ একটি দেশে অসংখ্য দ্রাঘিমারেখা থাকে, ফলে সেই দেশে একাধিক স্থানীয় সময় (1°-তে 4' সময়ের পার্থক্য অনুসারে) পরিলক্ষিত হয়। ফলে দেশের কাজকর্ম চালাতে খুবই অসুবিধা হয়। এই অসুবিধা দূর করার জন্য দেশের মধ্যবর্তী একটি নির্দিষ্ট দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময় অনুসারে ওই দেশের সব কাজ চালানাে হয় এবং ওই দ্রাঘিমার স্থানীয় সময়কেই সেই দেশের প্রমাণ সময় ধরা হয়। ভারতের ক্ষেত্রে 82°30' পূর্ব দ্রাঘিমারেখাটি প্রায় দেশের মাঝখান দিয়ে গেছে। তাই ওই দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় বা Indian Standard Time ধরা হয়। 82°30' পূর্ব দ্রাঘিমারেখাটি ভারতের উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ শহরের কোকাদ ও সােনাইটের ওপর দিয়ে প্রসারিত হয়েছে। 8
নিরক্ষীয় তল কী?
উঃ নিরক্ষরেখা ও পৃথিবীর কেন্দ্র যে তলে অবস্থিত, সেই তলকে নিরক্ষীয় তল বলে।
অক্ষাংশ কী?
উঃ নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে অবস্থিত কোন স্থান এবং পৃথিবীর নিরক্ষীয় তলের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের অক্ষাংশ বলে।
যেমন - পৃথিবীর নিরক্ষীয় তল বরাবর অবস্থিত নিরক্ষরেখার অক্ষাংশ 0⁰ . নিরক্ষরেখার উত্তরে অবস্থিত কলকাতার অক্ষাংশ 22⁰34' উত্তর ।
নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণ দিকে অক্ষাংশ ক্রমশ বাড়তে বাড়তে উত্তর মেরু বা দক্ষিণে মেরুতে 90⁰ তে শেষ হয়। আবার একই অক্ষরেখায় অবস্থিত সমস্ত স্থানের অক্ষাংশ সমান।
কৌণিক দূরত্ব কাকে বলে?
উঃ গােলাকার পৃথিবীর কোনাে স্থান নিরক্ষরেখা বা মূলমধ্যরেখা পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে ওই স্থানের কৌণিক দূরত্ব বলে। অর্থাৎ নিরক্ষরেখা বা মূলমধ্যরেখা পৃথিবীর কেন্দ্রে উৎপন্ন কোণকেই কৌণিক দূরত্ব বলে।
নিরক্ষরেখার অপর নাম বিষুবরেখা কেন?
উঃ বিষুব’ কথাটির অর্থ সমান। নিরক্ষরেখার ওপর বছরের প্রতিটি দিন সূর্যরশ্মি লম্বভাবে বা প্রায় লম্বভাবে পড়ে বলে।দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। তার্থাৎ, 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি সেই কারণে এই রেখাটির অপর এক নাম বিষুবরেখা।
মূলমধ্যরেখা কী?
উঃ ভূগােলকের অন্তর্গত 0° দ্রাঘিমারেখাটি মূলমধ্যরেখা (Prime Meridian) নামে পরিচিত। কাল্পনিক অবস্থান: এই রেখাটি লন্ডনের গ্রিনিচ মানমন্দিরের উপর দিয়ে কল্পনা করা হয়েছে।
নিরক্ষরেখা কী?
Ans. নিজে করো।
প্রমাণ সময় কী?
উঃ পৃথিবীর একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত স্থানগুলির স্থানীয় সময় এক হলেও 1° দ্রাঘিমার পার্থক্যে 4 মিনিট সময়ের পার্থক ঘটে। ফলে কোনাে দেশে বহুসংখ্যক দ্রাঘিমারেখার উপস্থিতির দরুন বিভিন্ন স্থানীয় সময় থাকলে রেল, ডাক, বেতার এবং প্রশাসনিক কাজ চালানাে অসুবিধাজনক হয়ে পড়বে।
এই অসুবিধা যাতে না হয়, সেজন্য কোনাে দেশের প্রায় মধ্যাঞ্চল দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত দ্রাঘিমাকে প্রমাণ দ্রাঘিমা ধরা হয় এবং এই দ্রাঘিমার ওপর। নির্ভর করে যখন দেশের বা ওই ভূখণ্ডের সময় নির্ণীত হয়, তখন তাকে ওই দেশ বা ভূখণ্ডের প্রমাণ সময় বলে।
উদাহরণ : ভারতের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে এলাহাবাদের কাছে অবস্থিত 82°30′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় হিসাবে ধরা হয়।
স্থানীয় সময় (Local Time)
উঃ পৃথিবীর পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তনের ফলে পৃথিবীর কোনাে-না-কোনাে দ্রাঘিমারেখা সূর্যের সামনে আসে, অর্থাৎ সূর্যরশ্মি প্রতিটি দ্রাঘিমারেখার উপর লম্বভাবে পতিত হয়। এইভাবে কোনাে দ্রাঘিমারেখায় সূর্যের সর্বোচ্চ উন্নতির সময় দুপুর 12টা ধরে দিনের বাকি সময়ের হিসাব করা হয়। এইভাবে আকাশে সূর্যের অবস্থান অনুসারে যে সময় নির্ধারণ করা হয়, তাকে স্থানীয় সময় বলে।
উদাহরণ : কলকাতায় (88°30′ পূর্ব) যখন সূর্যের উন্নতি সর্বোচ্চ তখন কলকাতার স্থানীয় সময় দুপুর 12টা। ঠিক সেই মুহূর্তে দিল্লির (77°12′ পশ্চিম) স্থানীয় সময় হবে সকাল 11টা 14 মিনিট 36 সেকেন্ড।
অক্ষরেখাগুলিকে সমাক্ষরেখা বলে কেন?
উঃ অক্ষরেখাগুলি পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিমে প্রসারিত পূর্ণবৃত্তাকার সমান্তরাল রেখা। অক্ষরেখাগুলি সমান অক্ষবিশিষ্ট হয়। এরা এক-একটি নির্দিষ্ট মানকে কেন্দ্র করেই সমান্তরালে কল্পিত। যেমন—নিরক্ষরেখা 0°, কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তিরেখা 2312°
ও দক্ষিণ, সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় রেখা 66%° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষবিশিষ্ট বলেই এদের সমাক্ষরেখা বলে।
উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশ বলতে কী বোঝ?
উঃ নিরক্ষরেখা হতে উত্তর বা দক্ষিণে কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সে স্থানের অক্ষাংশ বলে। ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থান থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত যদি কোন সরলরেখা টানা হয় তাহলে এই রেখাটি নিরক্ষীয় তলের সাথে যে কোণ সৃষ্টি করবে তাপ হবে ঐ স্থানের অক্ষাংশ।নিরক্ষরেখার উত্তরের অংশকে বলে উত্তর অক্ষাংশ এবং দক্ষিণ অংশকে বলে দক্ষিণ অক্ষাংশ।
আন্তর্জাতিক তারিখরেখা কী?
উঃ দ্রাঘিমারেখার পরিবর্তনের সাথে স্থানীয় সময়ের পরিবর্তন হয়। এভাবে দ্রাঘিমারেখার কারণে যে পরিবর্তন হয়, তাতে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করার সময় বা ভূপ্রদক্ষিণ করার সময় স্থানীয় সময়ের পার্থক্য এবং দিনের হিসাবের অসুবিধা হয়। এ সমস্যাটি তখনই প্রকট হয় যখন কোনো নির্দিষ্ট স্থান হতে কোনো বিমান বা সমুদ্রগামী জাহাজ পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ১৮০° দ্রাঘিমারেখা অতিক্রম করে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৮০° দ্রাঘিমারেখাকে অবলম্বন করে জলভাগের ওপর দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত একটি রেখা কল্পনা করা হয়। কাল্পনিক এ রেখাকে আন্তর্জাতিক তারিখরেখা বলে। তারিখরেখার ইংরেজি হলো International Date line
দ্রাঘিমাংশ কী?
উঃ :মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে অবস্থিত ভূ-পৃষ্ঠের কোন স্থানের কৌণিক দূরত্ব কে দ্রাঘিমাংশ বলে। অর্থাৎ পৃথিবীর কোন স্থানের দ্রাঘিমারেখা এবং মূলমধ্যরেখা থেকে নিরক্ষীয় তল বরাবর ভূ কেন্দ্র পর্যন্ত যদি দুটো কাল্পনিক রেখা টানা হয়, তাহলে দুটি রেখা ভূ কেন্দ্রে যে কোণ উৎপন্ন করবে সেই কোণ কে উক্ত স্থানের দ্রাঘিমাংশ বলা হয়।
একই দ্রাঘিমা রেখার ওপর অবস্থিত সমস্ত স্থানেরই দ্রাঘিমাংশ সমান হয়। সর্বনিম্ন দ্রাঘিমাংশ এর মান 0⁰ (মূলমধ্যরেখা) এবং সর্বোচ্চ দ্রাঘিমাংশ 180⁰ ( আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা)। কলকাতার দ্রাঘিমা 88⁰30' পূর্ব।
নিরক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত (Great Circle) বলে কেন?
উঃ অসংখ্য অক্ষরেখার মধ্যে একমাত্র নিরক্ষরেখাই পৃথিবীকে দুটি সমান গোলার্ধে ভাগ করেছে। তাই নিরক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত বলা হয়।এটি একটি পূর্ণবৃত্ত এবং সবচেয়ে বড়াে পরিধির বৃত্ত। সেইজন্য নিরক্ষবৃত্তকে মহাবৃত্ত বলে। মহাবৃত্ত বরাবর পৃথিবীকে কাল্পনিকভাবে কাটলে পৃথিবী সমান দুইভাগে বিভক্ত হবে।মহাবৃত্তের অক্ষাংশ ০° |
নিরক্ষরেখার অপর নাম বিষুবরেখা কেন?
উঃ বিষুব’ কথাটির অর্থ সমান। নিরক্ষরেখার ওপর বছরের প্রতিটি দিন সূর্যরশ্মি লম্বভাবে বা প্রায় লম্বভাবে পড়ে বলে।দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। তার্থাৎ, 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি সেই কারণে এই রেখাটির অপর এক নাম বিষুবরেখা।
.সমাক্ষরেখা কাকে বলে?
উঃ ভূগােলকের ওপর একই অক্ষাংশবিশিষ্ট স্থান বিন্দুগুলিকে পরপর যুক্ত করে যে রেখাটির সৃষ্টি হয়, তাকে সমাক্ষরেখা বলে। অর্থাৎ, সমান অক্ষাংশবিশিষ্ট রেখাকে সমাক্ষরেখা বলা হয় এবং একইসমাক্ষরেখার ওপর অবস্থিত প্রতিটি স্থানের অক্ষাংশ একই (সমান)।
দ্রাঘিমা (Longitude) কাকে বলে?
উঃ মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব ও সুমেরু পশ্চিমে কোনাে স্থানের নিরক্ষীয়তল বরাবর কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা (Longitude) বলে। তার্থাৎ, পৃথিবীর কেন্দ্রে মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বে ও পশ্চিমে কোনাে স্থানের কৌণিক দূরত্বকে সেই স্থানের দ্রাঘিমা বলে। উদাহরণস্বরূপ কলকাতার দ্রাঘিমাংশ ৪৪°30' পূর্ব কৌণিক দূরত্বের বলতে বােঝায় কলকাতা নিরক্ষীয় সাহায্যে দ্রাঘিমা নির্ণয় তল বরাবর মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বে ৪৪°30' কৌণিক দূরত্বে অবস্থিত।
180° পূর্ব ও 180° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখাকে কেন একই দ্রাঘিমারেখা বলা হয়?
180° পূর্ব ও 180° পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা দুটি একই স্থানে অবস্থিত বলে এই দ্রাঘিমারেখা দুটিকে একই দ্রাঘিমারেখা বলে।পৃথিবীর আয়তাকার মানচিত্রে এই রেখা দুটি অঙ্কন করা যায়, কিন্তু
ভূ-গােলকে একটি দ্রাঘিমারেখার দ্বারাই উভয় রেখাদ্বয়কে বােঝানাে হয়।
রৈখিক দূরত্ব (Linear Distance) কাকে বলে?
উঃ কোনাে সমতল জায়গায় দুটি স্থানের দূরত্ব সােজাসুজি ফিতে বা দড়ি দিয়ে মাপার পর ওই মাপটিকে সেন্টিমিটার, মিটার,কিলােমিটার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এইভাবে দূরত্ব প্রকাশ করাকে রৈখিক দূরত্ব (Linear Distance) বলে।
কলকাতার অক্ষাংশ 22°34’ উত্তর বলতে কী বােঝায় ?
উঃ কলকাতার অক্ষাংশ 22°34' উত্তর বলতে বােঝায় কলকাতা পৃথিবীর কেন্দ্র ও নিরক্ষীয় তলের সঙ্গে 22°34' কোণ উৎপন্ন করে এবং কলকাতা উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত।
কলকাতার দ্রাঘিমা ৪৪°30° পূর্ব বলতে কী বােঝায়? +
উঃ কলকাতা থেকে নিরক্ষীয় তল বরাবর পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত অঙ্কিত সরলরেখা, মূলমধ্যরেখা থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত সরলরেখার সঙ্গে ৪৪°30' কোণ উৎপন্ন করে এবং কলকাতা পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত।
ক্রোনােমিটার (Chronometre) কী ? *
উঃ ক্রোনােমিটার হল সময় নির্ণয়কারী এক বিশেষ ধরনের ঘড়ি,যা জাহাজের নাবিকদের কাজে লাগে। এই ঘড়ি গ্রিনিচের সময়কেই সূচিত করে, তবে এটি যে-কোনাে দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময় অনুসারে ঠিক করা যায়। সাধারণত নাবিকরা এর সাহায্যে গ্রিনিচের সময় জেনে জাহাজের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন।
সেক্সট্যান্ট কী?
উঃ সেক্সট্যান্ট হল সূর্যের সর্বোচ্চ উন্নতি কোণ অর্থাৎ, মধ্যাহ্ন (দুপুর 12টা) নির্ণয়কারী অক্ষাংশ পরিমাপক যন্ত্র। এই যন্ত্রে একটি শক্তিশালী দূরবিন লাগানাে থাকে। কোনাে স্থানের অক্ষাংশ নির্ণয় করতে হলে ধ্রুবতারা (উত্তর গােলার্ধ) বা হ্যাডলির অকট্যান্ট (দক্ষিণ গােলা) নক্ষত্রের অভিমুখে রাখা হয়। এই দুই নক্ষত্রের উন্নতি কোণ নির্দিষ্ট থানটির অক্ষাংশগত অবস্থান নির্দেশ করে।
একই অক্ষরেখা বরাবর স্থানগুলিতে একই সময়ে দিন ও রাত হয় কি? যদি না হয় তাহলে লে হয় না?
উঃ একই অক্ষরেখা বরাবর স্থানগুলিতে একই সময়ে দিন ও রাত হয় না। কারণ অক্ষরেখাগুলি পূর্ণবৃত্ত এবং পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে বেষ্টন করে রয়েছে এবং একই অক্ষরেখার উপর 180টি দ্রাঘিমারেখা অবস্থান করছে। সূর্যোদয় পূর্বদিকে আগে হয় এবং পশ্চিমদিকে পরে হয় বলে একই অক্ষরেখার পূর্ব গােলার্ধের স্থানগুলির সময় এগিয়ে থাকে এবং পশ্চিম গােলার্ধের স্থানগুলির সময় পিছিয়ে থাকে।
একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত জায়গাগুলির স্থানীয় সময় এক হয় কেন?
উঃ পৃথিবী 24 ঘণ্টায় একবার সূর্যকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে। তাই প্রতিটি দ্রাঘিমারেখাই 24 ঘন্টায় একবার করে সূর্যের সামনে আসে। সূর্য যখন যে দ্রাঘিমারেখার উপর অবস্থান করে তখন সেখানে লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং সেই দ্রাঘিমার সর্বত্র মধ্যাহ্ন সূচিত হয়। এই মধ্যাহ্ন অনুসারে ওই দ্রাঘিমার স্থানীয় সময় সূচিত হয়। তাই একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত জায়গাগুলির স্থানীয় সময় এক হয়
পৃথিবীতে মােট কটি অক্ষরেখা আছে?
উঃ নিরক্ষরেখা থেকে এর সমান্তরালে উত্তর ও দক্ষিণ গােলার্বে 1° অন্তর মােট ৪9 + 89 = 178টি ও নিরক্ষরেখাকে ধরে 178 +1=179টি অক্ষরেখা পৃথিবীতে কল্পনা করা হয়েছে। উভয় গােলার্ধে 90° হল বিন্দু। উত্তর গােলার্ধে এটি সুমেরু বিন্দু ও দক্ষিণ গােলার্ধে কুমেরু বিন্দু বিন্দু বলে একে রেখা হিসেবে ধরা হয় না ]।
পৃর্থিবীতে কটি দ্রাঘিমারেখা আছে?
উঃ মূলমধ্যরেখাকে 0° দ্রাঘিমারেখা ধরে এর 1 অন্তর পূর্ব দিকে 180টি এবং পশ্চিম দিকে 180টি মােট (180 + 180 + মূলমধ্যরেখা) = 361টি রেখা কল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু 180°-পূর্ব ও 180° পশ্চিম অক্ষরেখা পরস্পর মিলিত হয়ে একটিমাত্র দ্রাঘিমারেখারূপে কল্পিত হয়েছে। তাই পৃথিবীতে দ্রাঘিমারেখার সংখ্যা (361 - 1) = 360টি।
কোনাে একটি স্থানের দ্রাঘিমা 40° পূর্ণ হলে তার প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা কত হবে ?
উঃ কোনাে স্থান ও তার প্রতিপাদ স্থান দুটির মধ্যে দ্রাঘিমার ব্যবধান হয় সর্বদা 180°। সুতরাং, 40° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত স্থানটির প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা হবে (180° – 40° পূর্ব) = 140° পশ্চিম।
কোনাে একটি স্থানের প্রতিপাদ স্থান কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?
উঃ ভুপৃষ্ঠে অবস্থিত কোনাে স্থানের প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করতে হলে সেই স্থান বা বিন্দু থেকে একটি কল্পিত ব্যাস পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে বিপরীত প্রান্ত পর্যন্ত প্রসারিত করলে যে স্থান বা বিন্দুতে তা ছেদ করবে, সেটাই হবে প্রথম স্থানের প্রতিপাদ স্থান।
0 Comments