Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি সংক্ষেপে লেখ//PROCESSES OF PHYSICAL WEATHERING

 যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি সংক্ষেপে লেখ//PROCESSES OF PHYSICAL WEATHERING 

https://geographia97.blogspot.com/


উত্তরঃ- উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, তুষার, অভিকর্ষ, নদী, বায়ু, জীবজন্তু বা উদ্ভিদ প্রভৃতি নানা প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলাস্তর যখন ছোটো ছোটো খন্ড বা চূর্ণে পরিণত হয়ে মূল শিলার ওপর অবস্থান করে, এবং তার মধ্যে যখন কোনোরকম রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে না, তখন তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলা হয়।

 তাপমাত্রার পরিবর্তনের জন্য ঘটা যান্ত্রিক আবহবিকারগুলি হলঃ- পিন্ড বিশরন, শল্কমোচন, ক্ষুদ্রকণা বিশরণ; তুষারের দ্বারা তুহিন খন্ডীকরণ প্রভৃতি । এছাড়া জল এবং চাপ হ্রাসের ফলেও যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে থাকে ।

যান্ত্রিক আবহবিকারের পদ্ধতি:- যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটাতে সূর্যের তাপ, বায়ুপ্রবাহ, তুষার প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি খুব সক্রিয় । বৃষ্টির জল যান্ত্রিকভাবে কিছু শিলা ক্ষয় করে । তবে রাসায়নিক আবহবিকারে বৃষ্টির জল মূখ্য ভুমিকা গ্রহন করে ।  সুর্যতাপের প্রধান কাজ শিলা চূর্ণবিচূর্ণ করা । এর প্রভাবে প্রধানত তিনভাবে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়, যথা- (ক) খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ, (খ) গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন , (গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ


    (ক) খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ( block distingation) :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ  হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । শিলা তাপের সুপরিবাহী নয়। এই জন্য মরু অঞ্চলের গাছপালা হীন উন্মুক্ত প্রান্তরে দিনে এবং রাত্রে শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশের উষ্ণতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে । ক্রমাগত উত্তাপে প্রসারিত ও ঠান্ডায় সংকুচিত হতে হতে শিলার সন্ধিস্থল গুলো আলগা হয়ে যায় এবং শিলাগাত্রে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এই ফাটলগুলি কালক্রমে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভগ্ন স্তূপে পরিণত হয় । এই ভেঙে যাওয়া শিলার আকৃতি অনেকটা বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রের মতো হয় বলে আবহবিকারের এই বিশেষ প্রক্রিয়াটিকে খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড-বিশরণ বলে।    


  

(খ) গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন(exfoliation) :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন  হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । শিলাস্তর তাপের সুপরিবাহী না হওয়ার ফলে দিন ও রাতে শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশের মধ্যে উষ্ণতার যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে । উষ্ণতার এই তারতম্যের ফলে শিলাস্তরে ক্রমাগত প্রসারণ ও সংকোচন ঘটে । দীর্ঘদিন ধরে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে শিলার ওপরের স্তর ওপরের দিকে প্রসারিত হয় । তখন ওপরের স্তর নীচের অপেক্ষাকৃত শীতল স্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেঁয়াজের খোলার মতো খসে পড়ে। শিলার বাইরের অংশ এই ভাবে পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে গেলে ভিতরের অংশটি কিছুটা গোলাকার ও মসৃণ শিলাখন্ডে পরিণত হয় । এইভাবে সৃষ্টি হওয়া প্রধান গোলাকার শিলাটিকে ‘অবশিষ্ট গণ্ড-শিলা’ বলে। শল্কমোচনের ফলে শিলাখন্ড গুলো অনেকটা গোলাকার হয়ে যায়, তাই বিচূর্ণীভবনের এই বিশেষ প্রক্রিয়াকে গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন  বলে। একই জাতীয় খনিজ পদার্থে গঠিত সমপ্রকৃতির শিলায় শল্কমোচন বেশি হয় ।



 (গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ(granular distingation) :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ  হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । যেসব শিলা বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থে গঠিত, সেই সব বিষম গুণ সম্পন্ন ও বড় দানা যুক্ত শিলা গুলো ঠান্ডায় বা গরমে সমান ভাবে সংকুচিত বা প্রসারিত হতে পারে না । এরফলে শিলাস্তরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন টানের সৃষ্টি হয় এবং তাতে শিলা সশব্দে ফেটে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায় । উষ্ণতার তারতম্যের ফলে এইভাবে বিষম গুণসম্পন্ন শিলার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়াকে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে।



(ঘ) তুহিন খন্ডিকরণ বা তুষারের কাজ :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলির মধ্যে তুহিন খন্ডিকরণ বা তুষারের কাজ হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । শীতল জলবায়ু অঞ্চলে, উচ্চ অক্ষাংশে বা উচ্চ পর্বতগাত্রে দিনের বেলায় বা গ্রীষ্মকালে বরফ গলে অথবা বর্ষাকালে শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে জল সঞ্চিত হলে তা পরে শীতকালে বা রাত্রিবেলা অত্যধিক ঠান্ডায় জমে বরফে পরিণত হয় । জল বরফে পরিণত হলে আয়তনে শতকরা দশভাগ বৃদ্ধি পায় । এর ফলে ফাটলের মধ্যস্থিত জল বরফে পরিণত হয়ে ফাটলের দু’পাশের দেওয়ালে প্রচন্ড চাপের সৃষ্টি করে । এই চাপের ফলে ফাটল ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং শিলাস্তর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খন্ডে পরিণত হয় । যান্ত্রিক আবহবিকারে এই বিশেষ প্রক্রিয়াটিকে তুহিন-খন্ডিকরণ বা তুষারের কাজ বলে ।



(ঙ) চাপ হ্রাসের ফলে :- ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগের শিলাস্তরে আবহবিকারের ফলে সৃষ্টি হওয়া এবং মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকা শিলাচূর্ণ গুলি ক্রমাগত নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি শক্তিগুলি দ্বারা অপসারিত হলে শিলাস্তরের ওপরের অংশের চাপ কমে যায় । শিলাস্তরের ওপরের অংশের চাপ কমে যাওয়ার ফলে নীচের শিলাস্তরগুলি প্রসারিত হয় এবং শিলাস্তরের মধ্যে ভূ-পৃষ্ঠের সমান্তরালে নানা আয়তনের ফাটল (Crack) সৃষ্টি হয় । এই সব ফাটলের প্রভাবে বড়ো বড়ো শিলার স্তরে বিচ্যুতি ঘটে । ক্রমশ ওই ফাটল বরাবর শিলাস্তর বিচ্ছিন্ন ও খন্ডবিখন্ড হয়ে যায় ।


READ MORE 

WB CLASS 9 GEOGRAPHY CLICK HERE 

CLASS 12 WB GEOGRAPHY CLICK HERE

WB CLASS 10 GEOGRAPHY CLICK HERE 

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code