Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

মাল্ভূমিঃ সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণিবিভাগ

 মালভূমি সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণিবিভাগ 


মালভূমিঃ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০ – ৬০০ মিটার উচুতে অবস্থিত, উপরিভাগ প্রায় সমতল বা তরঙ্গায়িত এবং চারিদিক খাড়া ঢালযুক্ত বিস্তৃত ভূমিকে মালভূমি বলা হয়। মালভূমির অপর নাম টেবিলল্যান্ড কারণ মালভূমি দেখতে অনেকটা টেবিলের মতো , এর ওপরটা প্রায় সমতল এবং চারিদিক খাড়া ঢালযুক্ত হয়। পৃথিবীর মোট  ভূ-ভাগের ৩৩ শতাংশ হল মালভূমি। আর এই মালভূমিতেই খনিজ সম্পদ সবচেয়ে বেশি সঞ্চিত আছে।

 

মালভূমির বৈশিষ্ট্য-

১)মালভূমি হল বিস্তৃত উচ্চভূমি।

২)মালভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাধারণত ৩০০ থেকে ৬০০  মিটার উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করে।

৩)মালভূমির উপরিভাগ কিছুটা তরঙ্গায়িত বা উঁচু নিচু হয়ে থাকে।

৪)মালভূমির চারদিকে খাড়া ঢাল যুক্ত হয়।

৫) মালভূমির অপর নাম টেবিলল্যান্ড কারণ মালভূমি দেখতে অনেকটা টেবিলের মতো , এর ওপরটা প্রায় সমতল এবং চারিদিক খাড়া ঢালযুক্ত হয়।

৬)মালভূমির উপরিভাগে ছোট ছোট পাহাড় অবস্থান করতে পারে।

৭)মালভূমি বয়সে প্রাচীন ও নবীন উভয় ধরনের হতে পারে।

৮) পৃথিবীর মোট  ভূ-ভাগের ৩৩ শতাংশ হল মালভূমি।

৯)  মালভূমিতেই খনিজ সম্পদ সবচেয়ে বেশি সঞ্চিত আছে।

 

মালভূমির শ্রেণীবিভাগ

উৎপত্তি অনুসারে মালভূমিকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় -----

 


1.      পর্বতবেষ্টিত মালভূমি (ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট মালভূমি),

2.      ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি (ক্ষয়জাত মালভূমি) এবং

3.      লাভা-গঠিত মালভূমি (সঞ্জয়জাত মালভূমি)।

 

 

পর্বতবেষ্টিত মালভূমি (ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্ট মালভূমি)



সংজ্ঞাঃ  যেসকল মালভূমির চারদিক  পর্বত দ্বারা বেষ্টিত বা ঘেরা থাকে, তাদের পর্বতবষ্টিত মালভূমি বলে

উদাহরনঃ তিব্বত মালভূমি, ইরানের মালভূমি

সৃষ্টির কারণঃ ভু-আলোড়নের ফলে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টি হওয়ার সময় দুটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেনীর মাঝখানের স্থান পার্শ্বচাপের উচু হয়ে এই প্রকার মালভূমির সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্যঃ

১)পর্বত বেষ্টিত মালভূমি চারদিকে পর্বত দ্বারা বেষ্টিত থাকে।

২)অন্যান্য মালভূমির তুলনায় উচ্চতা বেশী হয়

৩) মালভূমি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে।

৪)এই ধরনের মালভূমি নবীন ভঙ্গিল পর্বত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়।

৫)এই ধরনের মালভূমি পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয় এবং পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত হয়

৬) এই ধরনের মালভূমিতে শিলাস্তরের মধ্যে জীবাশ্ম থাকে।

 

 

ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি (ক্ষয়জাত মালভূমি )



সংজ্ঞাঃ যে সব  মালভূমি অঞ্চল  নদী উপত্যকা, হিমবাহ বায়ু  দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হলে, তাকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে।

উদাহরনঃ ছোটোনাগপুরের মালভূমি। বুন্দেলখন্ড ও বাঘেলখন্ড মালভূমি

সৃষ্টির কারণঃ নদী, বায়ু, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে প্রাচীন পর্বত অঞ্চল ধীরে হীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং উচ্চতা হ্রাস পায়। এরপর ওই মালভূমির ওপর দিয়ে নদনদী ও তার শাখা প্রশাখা প্রবাহিত হলে এদের উপত্যকা বরাবর মালভূমিটি ছোটো ছোটো অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এইভাবে কোনো বিস্তৃত মালভূমি অঞ্চল নদী উপত্যকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্যঃ

১)ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কঠিন ও প্রাচীন শিলা দ্বারা গঠিত।

২)এই ধরনের মালভূমির উচ্চতা অন্যান্য মালভূমির তুলনায় অনেক কম হয়।কারন প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে থাকে।

৩ ) মালভূমির ওপর দিয়ে নদনদী ও তার শাখা প্রশাখা প্রবাহিত হলে এদের উপত্যকা বরাবর মালভূমিটি ছোটো ছোটো অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে

লাভা-গঠিত মালভূমি (সঞ্জয়জাত মালভূমি)।




সংজ্ঞাঃ ভূত্বকের কোন চ্যুতি, ফার্টল বরাবর  ভূ-অভ্যন্তরীণ ম্যাগমা  ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এসে বিশাল অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে  এবং তা ক্রমশ শীতল ও কঠিন হয়ে মালভূমিতে পরিণত হলে তাকে লাভা মালভূমি বলে। অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে লাভা সঞ্চয়ে এই মালভূমি গঠিত বলে একে আগ্নেয় মালভূমি বা সঞয়জাত মালভূমি বলা হয়

উদাহরনঃ যেমনঃ ভারতের দাক্ষিনাত্য মালভূমি।

সৃষ্টির কারণঃ অনেক সময় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূত্বকের কোনো ফাটল বা দুর্বল অংশের মধ্য দিয়ে নির্গত হয়ে ভূপৃষ্ঠে লাভা রুপে স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই সঞ্চিত লাভা ঠান্ডা ও কঠিন হয়ে লাভা মালভূমির সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্যঃ

১) অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে লাভা সঞ্চয়ে এই মালভূমি গঠিত

২)লাভা মালভূমির উপরিভাগ সমতল টেবিলের মত চ্যাপ্টা হয়।

৩)এই জাতীয় মালভূমি ব্যাসল্ট জাতীয় লাভা শিলা দ্বারা গঠিত

৪) অনেক সময় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা ভূত্বকের কোনো ফাটল বা দুর্বল অংশের মধ্য দিয়ে নির্গত হয়ে ভূপৃষ্ঠে লাভা রুপে স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই সঞ্চিত লাভা ঠান্ডা ও কঠিন হয়ে লাভা মালভূমির সৃষ্টি করে।

 

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code