ভিতরকানিকার ম্যানগ্রোভ কথা
পৃথিবীর বিভিন্ন ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের উপকূল জুড়ে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের সমাবেশ দেখা যায় । বিশ্বের ১৩৭৮০০ বর্গ কিমি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ৭% রয়েছে আমাদের ভারতীয়
উপমহাদেশে। ভারতীয় উপকূলরেখা বরাবর ৪৯২১ বর্গ কিমি ম্যানগ্রোভ অরণ্য যা ভারতের আয়তনের ০.১৫% অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রতরঙ্গের প্রভাবে সৃষ্ট
খাঁড়িতে , নদী মোহনায় ও নদী বদ্বীপ গঠিত
অঞ্চলে প্রতিনিয়ত জোয়ারভাটারযুক্ত অধ্যুষিত স্থানে ঠেসমূল ও শাখামূল যুক্ত যে
বিশেষধরনের এক লবণাম্বু উদ্ভিদ জন্মায় তা ম্যানগ্রোভ নামে পরিচিত । ম্যানগ্রোভ
শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ মনে করেন স্প্যানিশ শব্দ “ MANGLE” থেকে এসেছে আবার কেউ মনে করেন
পর্তুগীজ শব্দ “ MANGROW “ থেকে এসেছে যার অর্থ হল “ মানুষ দ্বারা সৃষ্ট
অরণ্য”। সুতরাং বলা যায় যে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে নোনা বা লবনাক্ত মাটিতে জোয়ারভাটা
জলে পুষ্ট হয়ে একক অনন্য বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করেছে এই ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। বাস্তুতান্ত্রিক ও
পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষাতে এই
ম্যানগ্রোভের অবদান অনবদ্য। ২০১৭ সালের সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে ওড়িশা
রাজ্যে বালেশ্বর ,ভদ্রক, জগতসিংহপুর , কেন্দ্রপাড়া ও পুরী জেলার ২৪৩ বর্গকিমি জুড়ে
অবস্থান রয়েছে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ যার বেশীরভাগই অবস্থান করে কেন্দ্র পাড়া জেলায়।কেন্দ্রপাড়া
জেলার ব্রাহ্মণী , বৈতরিনী
নদী বদ্বীপ অঞ্চলে প্রায় ২০০ বর্গ
কিমি অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করেছে ভিতরকনিকা
ম্যানগ্রোভ অরণ্য ।এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহতম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। ভৌগোলিক
অবস্থান অনুসারে ২০°৩০’ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০° ৫০’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬ ° ৪৮’ পূর্ব থেকে ৮৬°৫৮’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত
বিস্তৃত । ১৯৫২ সালের আগে পর্যন্ত ভিতরকনিকা জমিদারদের দখলে ছিল।জমিদারি প্রথা
বিলুপ্তির পর এই ম্যানগ্রোভ ওড়িশা সরকারের দখলে চলে যায়। ১৯৭৫ সালে ব্রাহ্মণী ও
বৈতরিনী নদীর বদ্বীপ অঞ্চল নিয়ে তৈরি হয় ভিতারকনিকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য যেখানে
মূলত নোনা জলের কুমিরের আবাসস্থল ।এরপর ১৯৯৭ সালে ভিতারকনিকা
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের পূর্ব দিকে
গাহিরমাথা বেলাভূমি নিয়ে তৈরি হয় সামুদ্রিক
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, প্রধানত olive ridley sea turtle বা সামুদ্রিক কচ্ছপের আবাসস্থল । তার ঠিক পরের
বছর ১৯৯৮ সালে ১৪৫ বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে
তৈরি হয়েছে ভিতরকনিকা জাতীয় উদ্যান। ভিতরকনিকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য আন্তর্জাতিক গুরুত্বের জন্যে রামসার জলাভূমি
হিসাবে স্বীকৃতি পায় ২০০২ সালের অগাস্ট মাসে । ম্যানগ্রোভ অরণ্যটিকে ঘিরে রয়েছে
বিভিন্ন নদী সমূহ যেমন উত্তরে ধামরা নদী ,
দক্ষিণে মায়পুরা নদী , পশ্চিমে ব্রাহ্মণী ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর রয়েছে।স্থলজ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের
সংযোগস্থাপনকারী এই ম্যানগ্রোভ শুধুমাত্র পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে না, মানুষের
জীবনধারণের উপরও প্রভাব বিস্তার করে। স্থানীয় মানুষেরা ম্যানগ্রোভ অরণ্য থেকে কাঠ
সংগ্রহ , মৎস্যশিকার, মধুসংগ্রহ প্রভৃতির মাধ্যমে জীবনধারন করে , এছাড়াও উপকূলীয়
অঞ্চলগুলিতে সাধারণত ঝড়ের প্রকোপ বেশী থাকে ফলে এই ম্যানগ্রোভই ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করে।ভিতরকনিকা ম্যানগ্রোভ
মূলত ইন্দো – মলয় উদ্ভিদগোষ্ঠীর
অংশভুক্ত।এর উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক সময় জানা না থাকলেও এই অঞ্চলের মৃত্তিকার
প্রকৃতি থেকে অনুমান করা যায় যে এর উৎপত্তি হয় আজ থেকে প্রায় ১.৮ মিলিয়ন বছর আগে,
প্লিস্টোসিন যুগে। ডুকে ( duke) বলেছিলেন যে
ম্যানগ্রোভের উৎপত্তি হয় ১.১৪ মিলিয়ন বছর আগে। এখানে অসংখ্য খাঁড়ি ও ছোট নদীর সমাগম ও প্রতিনিয়ত
জোয়ারভাটার জল উঠা – নামা চলতে থাকে, কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নদী ব্রাহ্মণী, বৈতরিণী
নদী ও তাদের অসংখ্য শাখানদীগুলি এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে যেমন ধামরা , মায়পুর
, পটসালা, হান্সু, এবং হাসিনা
প্রভৃতি।এছাড়াও এই অরণ্য ১৪ টি ছোট ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য
হল কালিভাজাদিয়া(kalibhanjadia), বাগুলিদিয়ান(bagulidian), হাভেলিকাতি(havelikati),
হুকিতলা(hukitola), সর্ত ( sort) বাবুবালি(babubali), নাদিয়াবালি(nadiabali) মানকুইদিয়ান(mankuidian), এবং উদালিবালি(udaibali) প্রভৃতি। হাভেলিকাতি ও
বাবুবালি দ্বীপ দুইটি গাহিরমাথা সামুদ্রিক বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে অবস্থিত যা প্রধানত olive ridley turtle এর আবাসস্থল। ভিতরকনিকা বন্য প্রাণী
অভয়ারণ্যে অবস্থিত কালিভাঞ্জাদিয়া , সর্ত ও নাদিয়াবাড়ি দ্বীপ গুলিতে নোনা জলের
কুমীরের বাসস্থান এবং ঘন ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ জন্মায়। হুকিতলা
দ্বীপ অশ্বক্ষুরাকৃতি কাঁকড়ার জন্যে বিখ্যাত।
এখানে ক্রান্তীয় জলবায়ুর প্রভাবে বছরে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৯২০ থেকে ৩০০০
মিমি এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৪০° ও ১০°সে হয়ে থাকে। বাতাসে আর্দ্রতা পরিমাণ
থাকে ৩৫% থেকে ৯৫% ।এই অঞ্চলের মাটিকে প্রকৃতি ও সঞ্চয়ের উপর নির্ভর করে দুই ভাগে
ভাগ করা হয় ১) খাদার ( new alluvial) 2) ভাঙ্গার ( old alluvial) । বঙ্গোপসাগরের কাছে অবস্থানের কারণে বছরে অন্ততপক্ষে দুইবার ঝড়ের কবলে পড়ে এই অঞ্চল।
উপরক্ত জলবায়ুগত বৈশিষ্টের কারণে এই
স্থানে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ ছাড়াও অন্যান্য
উদ্ভিদ ও প্রাণীর সমাবেশ দেখা যায়।সাধারণত আমরা জানি যে ম্যানগ্রোভ অরণ্য আলগা
কর্দমাক্ত ভূমিতে জন্মায় এবং জোয়ারভাটার স্রোত থেকে বাচার জন্যে এদের ঠেসমূল থাকে। এছাড়াও অসম্পৃক্ত মাটিতে
বায়ু চলাচল বাঁধা থাকায় অক্সিজেনের জন্যে এদের শ্বাসমূল থাকে।ঠেসমূল ও শ্বাসমূল
যুক্ত প্রায় ৭১ টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে ভিতরকনিকায়। ১৯৭ বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে প্রধানত
অবস্থিত ম্যানগ্রোভকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় ১। অতি ঘন ম্যানগ্রোভ( dense mangrove) যা ৮২
বর্গ কিমি জুড়ে রয়েছে ২। মাঝারি ঘন ম্যানগ্রোভ( moderate dense mangrove) যা ৮৩ বর্গ কিমি জুড়ে রয়েছে ৩।
বিক্ষিপ্ত ম্যানগ্রোভ ( open mangrove) যা ৩২ বর্গ কিমি জুড়ে রয়েছে।শুধু উদ্ভিদ গোষ্ঠী
নয় , প্রাণী ও পক্ষীকুলের সমাবেশে গড়ে উঠেছে এক অনন্য বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশ। ভারতে মোট ৫৮
টি প্রজাতির ম্যানগ্রোভের মধ্যে ৫৫ টি ম্যানগ্রোভ টি ম্যানগ্রোভ প্রজাতি
ভিতরকনিকাতে পাওয়া যায়। ৩৮ টি বর্গের এবং ২৮ টি পরিবারযুক্ত উদ্ভিদ পাওয়া যায়।
সবচেয়ে বেশী যেসব প্রজাতি প্রাধান্য বিস্তার করে সেগুলি হল Avicennia ( ৩ টি বর্গ ) , Rhizophora ( ১০ টি বর্গ) , Leguminosae ( ৫ টি বর্গ) , Cyperaceae ( ৩ টি বর্গ ) , Plumbaginaceae
( ৩ টি বর্গ) প্রভৃতি। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদগুলি হল বাদাবন (Avicennia officinalis), কালাবন ( Avicennia
alba), গেওয়া ( Excoecaria agallocha), সুন্দরী (Heritiera
littorallis), কেওড়া (Sonnertia
apetala), গর্জন ( Rhizophora apiculata), রাই (Rhizophora mucronata), সিন্ধু গেওয়া (Kandelia candel), গরান (Ceriops
decandra), হেতাল
(Phoenix paludosa),খলশী (Aegiceras corniculatum) প্রভৃতি।
১৯৯০ সালে ব্যানার্জি ও রাও ম্যানগ্রোভকে দুইভাগে
ভাগ করেছেন
১) মোহনায়
বহির্ভুত ম্যানগ্রোভ ( outer estuarine
bank vegetation) মোহনায় বহির্ভুত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের লবন সহ্য ক্ষমতা বেশী এবং এখানে
তরঙ্গের আঘাত ও বেশী দেখা যায়। উল্লেখযোগ্য উদ্ভিদ প্রজাতিগুলি হল মরিচা বাইন ( Avicennia marina) ,খলশি (Aegiceras
corniculatum) , হেতাল , চাকন্দা ( sonneratia griffithii) , কালাবন ( Avicennia
alba), বকুল ( bruguiera
parviflora), বন্দেরি ( B.cylindrica), হেতাল ( phoenix paludosa) এবং গোলপাতা (aegalitis
rotundifolia) এছাড়াও porteresia
coactata একজাতীয় ঘাসের সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়।
২) মোহনার
অভ্যন্তরীণ ম্যানগ্রোভ( inner estuarine bank vegetation)
মোহনার মধ্যে যে যে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ জন্মায়
সেগুলি হল বাদাবন (avicennia officinails), (sonneratia apetala) ,গেওয়া (excoecaria agallocha) , সুন্দরী (heritiera fomes,heritiera littoralis) , সিন্ধু গেওয়া (kandekia kandel) , সুসুমা (xylocaepus granatum) এবং রাই (rhizophora mucronata), বনলেবু (merope
angulata) এবং মধুকা ( cynometra iripa) প্রভৃতি উদ্ভিদ দেখা যায়।
শুধুমাত্র উদ্ভিদের প্রাচুর্য নয়, ভিতরকানিকাতে
প্রাণী বৈচিত্র্যও লক্ষ্য করা যায় ।
ভিতরকানিকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য প্রধানত ২৩ ফুট লম্বা নোনা জলের কুমীরের জন্যে বিখ্যাত।kar এবং pattanayak ১৯৯৯ সালে একটি সমীক্ষায় ৭০০ টি নোনা জলের কুমীর
শনাক্ত করেন , ২০১৯ সালে নতুন করে ১০৩ টি কুমীর পাওয়া গেছে। ৩৫ কিমি বেলাভূমি
জুড়ে গাহিরমাথা সামুদ্রিক বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে olive ridley
turtle পাওয়া যায়। মূলত শীত কালে বংশবৃদ্ধির জন্যে এই সমুদ্র সৈকতে আসে । ২০১৫সালে মার্চ মাসে ৪১৩৩৩৩৪ টি কচ্ছপের ডিম পাওয়া যায়
এই স্থান থেকে। ভিতরকনিকা ম্যানগ্রোভ অরন্যে ৪২০ টি প্রাণী প্রজাতি ও ২৬৪ টি পক্ষী
প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে । সবচেয়ে বেশী বসবাসকারী
স্তন্যপায়ী প্রাণী গুলি হল বন্য শূকর, চিত্রা হরিণ, ভারতীয় ভাম, চিতা বিড়াল ,
সজারু, বন্য বিড়াল , হায়না , লাল বানর, শিয়াল ও নেকড়ে প্রভৃতি। যেসব সরীসৃপ
প্রাণীর প্রাধান্য রয়েছে সেগুলি হল বড়ো গুইসাপ, হলুদ গুইসাপ, গোসাপ , গিরগিটি ,
পাইথন, ভাইপর, স্যান্ড স্কিনক , শঙ্খিনী সাপ এবং নোনা জলের কুমীর প্রভৃতি।২০১৫
সালে একটি সমীক্ষায় জানা যায় যে মোট ৫১১৯
টি বন্য শূকর ও হরিন এবং ৬২৫৩ টি স্তন্যপায়ী প্রাণী শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও
কিছু শামুকের প্রজাতি , পতঙ্গ শ্রেণী ও আর্থপোডা শ্রেণী , অ্যানিলিডা শ্রেণী ও
মাছের প্রজাতি পাওয়া যায়। grimmett 1998 সালে এক সমীক্ষায় প্রকাশ করেন বিশ্বের ৭৫ টি পক্ষী প্রজাতির মধ্যে ৪৮ টি পক্ষী
প্রজাতির এই ভিতরকনিকাতেই পাওয়া যায়। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পক্ষী প্রজাতি হল ডুবুরি
পাখি প্রজাতি ( podicipedi formes) , সারস পাখির প্রজাতি ( pelecani
formes) , জলকুক্কুট ( Anserifoemes) , বাজপাখি ,( falconi formes
) , শিকারি পক্ষী ( gruiformes ) , উপকূলীয় পক্ষী প্রজাতি ( charadril
formes) , ঘুঘু ( columbiformes) , নিশাচর পক্ষী প্রজাতি প্রভৃতি। এই ম্যানগ্রোভ অরন্যে প্রতি বছর শীতকালে ৮৮ টি পরিযায়ী পাখির আগমন হয় ।। এছাড়াও ৫৭ টি জলকুক্কুট এর নিজেদের বংশবৃদ্ধির জন্যে
আসে।
উদ্ভিদ ও প্রাণী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা ভিতরকনিকা
বর্তমানে বিপর্যয়ের মুখে কিছুটা জলবায়ুগত
পরিবর্তন ও কিছুটা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের জলের
উত্থান ও পতন , ঝড়ের প্রকোপে ম্যানগ্রোভ ক্ষতির মুখে পড়ছে । ২০১১ সালের
আদমশুমারি অনুযায়ী ভিতরকনিকা ম্যনগ্রোভে ৩১০ টি গ্রাম সহ ১৪৫৩০১ জন মানুষ বসবাস
করেন। এই অঞ্চলের মানুষজন জীবন ধারনের জন্যে ম্যনগ্রোভ ও মৎস্যের উপর নির্ভর করে।কিছু
অসাধু ব্যক্তিরা বেআইনিভাবে মাছের ব্যাবসা শুরু করেছে এবং বন কেটে কৃষি জমিতে পরিণত করেছে। স্থানীয় মানুষ
অরণ্য থেকে কাঠ, সংগ্রহ করে বিভিন্ন কাজে লাগাচ্ছে, এবং কাঠ চোরাই শিল্পের প্রসার
ঘটছে। reddy এক সমীক্ষায় দেখান যে ১৯৭৩ সালে ঘন ম্যানগ্রোভের পরিমাণ ছিল ১৪৭ বর্গ কিমি
এবং বিক্ষিপ্ত ম্যানগ্রোভের পরিমাণ ছিল ৩৩ বর্গকিমি, সাম্প্রতি ২০১৭ সালে survey of India
রিপোর্ট
অনুসারে ঘন অরণ্যের পরিমাণ ৮২ বর্গ কিমি ও বিক্ষিপ্ত অরণ্যের পরিমাণ ৩২ বর্গ কিমি।
বর্তমানে কেন্দ্রপাড়া অঞ্চলে বাগদা- চিংড়ি
(prawn) মাফিয়াদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যথেচ্ছ হারে বেআইনি ভাবে বাগদা- চিংড়ি (prawn) সংগ্রহ করা হচ্ছে।কোন কিছুরই অতিরিক্ত ব্যবহারে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়। উপকূলীয় উন্নয়ন , মানুষের হস্তক্ষেপ ও জলবায়ুর
পরিবর্তনের ফলে ম্যানগ্রোভ ও সেখানকার
জীববৈচিত্র্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ICUN এর রিপোর্ট অনুসারে ৬ টি
ম্যানগ্রোভ কে বিপন্ন তালিকাভুক্ত করেছে
সেগুলি হল হারকাঞ্চা ( acanthus volubilis) , গসিঙ্গা ( dolichandrone
spathacea) , মাসিথা ( insta bijuga)
, চুরান্দ
( lummitzera
litorea) , লুনিকা ( pondanus fascicularis) ইত্যাদি।
সুতরাং বলা যায় যে মানুষ যত দিন অরন্যকে কেন্দ্র
করে জীবন নির্বহ করত ততদিন মানুষ – অরণ্যের সম্পর্ক মধুর ছিল। কিন্তু সভ্যতার
অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষ উন্নতির শিখরে পৌঁছাবার জন্যে অরণ্যের ক্ষতি করতে শুরু
করল। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে । পুরোপুরি অরণ্যের ধ্বংস ও জীব
বৈচিত্র্যে বিপর্যয় নেমে আসার আগে মানুষকে
সচেতন হওয়াটা সবচেয়ে জরুরি। এছাড়াও সরকারী নীতির ও আইন প্রণয়ন ও উপগ্রহ চিত্রের
মাধ্যমে বিশ্লষন করে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহন করে সংরক্ষণের প্রয়োজন।
সায়ন্তনী সিং
তথ্যসুত্রঃ
*
wikipedia
*
telegraph
*
times of india
*
Floral Diversity of Bhitarkanika, East Coast of India and
its potential uses by Durga Prasad Behera and Lakshman Nayak.
*
Information Sheet on Ramsar Wetlands (RIS)
*
COASTAL TRACT OF ODISHA: GEOLOGY, RESOURCES AND ENVIRONMENT
*
FAUNAL DIVERSITY OF BHITARKANIKA MANGROVES, ODISHA by C.
Venkatraman, P. Padmanaban S. ShriniVaaSu and G. SiValeela
উত্তরাখণ্ডের পথেই কি এবার দার্জিলিং?
ভৌগোলিক তত্ত্ব
0 Comments