Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

মৌসুমি বায়ুঃ আরবসাগরীয় ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা// MONSOON : BRANCH OF BAY OF BENGAL AND BRANCH OF ARABIAN SEA

 মৌসুমি বায়ুঃ আরবসাগরীয় বঙ্গোপসাগরীয় শাখা

 


নিরক্ষরেখার দক্ষিনে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু উত্তর-পশ্চিম দিকে  প্রবাহিত হয় মূলত ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে শক্তিশালী নিম্নচাপ বলয় অবস্থান করায় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে  এই বায়ু  ছুটে আসে এবং নিরক্ষরেখা অতিক্রম করার সময় ফেরেলের সূত্র অনুসরণ করে কিছুটা ঘড়ির কাটার দিকে বেঁকে গিয়ে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু রূপে উত্তর -পূর্বে প্রবাহিত হতে শুরু করে এই অঞ্চলে ITCZ বরাবর উত্তর পূর্ব দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর  সংযোগ ঘটে পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ -পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ভারত মহাসাগরের পৃষ্ঠদেশ বরাবর দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে দুটি শাখা যথাক্রমে আরবসাগরীয় বঙ্গোপসাগরীয় শাখা রূপে ভারতীয় মূল ভুখন্ডে প্রবেশ করে

 

আরবসাগরীয় বঙ্গোপসাগরীয় শাখা


দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরবসাগরীর শাখাটি পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমে  বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে অবস্থিত বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত সংঘটিত করে। অন্যদিকে পর্বতের পূর্বদিকে অনুবাত ঢালে জলীয়বাষ্প হ্রাস পাওয়ার কারণে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে, যার ফলে এই অঞ্চলটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল রূপে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ মুম্বাইয়ে যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেন্টিমিটার ,সেখানে পুনেতে বার্ষিক বৃষ্টিপাত মাত্র ৫০ সেন্টিমিটার। অন্যদিকে আরবসাগরীয় শাখার কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ু স্রোত উত্তরে বিক্ষিপ্ত হয়ে গুজরাটের কছ এবং রাজস্থানের থর মরুভূমির দিকে অগ্রসর হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এই বায়ু স্রোত গুলির কাশ্মীর পর্যন্ত প্রসারিত হয়ে কোন কোন স্থানে মৃদু বৃষ্টিপাত সংঘটিত করে। রাজস্থানের মরু অঞ্চল বৃষ্টিহীন থাকার অন্যতম কারণ হলো দুটিপ্রথমত, আরাবল্লী পর্বতটি উত্তর-দক্ষিণ অক্ষ বরাবর অবস্থান করায় ইহা মৌসুমী বায়ুর গতিপথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না, দ্বিতীয়তঃ এছাড়াও পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশ থেকে আগত শুষ্ক মহাদেশীয় বায়ুপুঞ্জ মৌসুমী বায়ুর আদ্রতা শোষণ করে নেওয়ার জন্য বায়ুতে জলীয় বাষ্প কমে যায়

 

অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটির একটি অংশ  শ্রীলংকা,সুমাত্রা ইন্দোনেশিয়া উপদ্বীপ বরাবর সক্রিয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করে এবং এটি মায়ানমারের আরাকান টেনাসেরিম পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মায়ানমারের পূর্ব উপকূলে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত (জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪২৫ সেন্টিমিটার) সংঘটিত করে। অপর একটি অংশ  ভারতের উত্তর -পূর্বের খাসি পাহাড়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির মৌসিনরামে পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিপাত সংঘটিত করে। মৌসিনরামে গড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২৫০ সেমি।  অনুবাত ঢালে অবস্থিত শিলং বৃষ্টিচ্ছায়া অঞ্চলরূপে অবস্থান করে। এই শাখাটি ক্রমশ দক্ষিণ-পূর্ব থেকে  উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং  গাঙ্গেয় সমভূমি সহ সমগ্র উত্তরের সমভূমি অঞ্চল জুড়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। অপরদিকে মৌসুমী বায়ুর প্রত্যাবর্তন কালে উত্তর পূর্ব মৌসুমী বায়ু রুপে প্রবাহিত হয় এবং স্থলভাগ থেকে  জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে তামিলনাড়ুর করমন্ডল উপকূলে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত ঘটায়


Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code