Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

সামুদ্রিক প্রক্রিয়াসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ// HS GEOGRAPHY//marine proccess and their landforms

 


 সামুদ্রিক প্রক্রিয়াসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ পার্ট ১

১) সমুদ্রতরঙ্গ কাকে বলে?

উঃ সমুদ্র জলরাশির প্রাকৃতিক বিভিন্ন শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে  ওঠানামা করাকে  বলা হয় সমুদ্রতরঙ্গ।

২) সমুদ্রতরঙ্গ কাকে বলে?

উঃ ভূকম্পন, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে সমুদ্রের জলরাশি যখন এক স্থানে ওঠানামা করে, কিন্তু স্থানচ্যুতি ঘটে ঢেউ এগিয়ে গেলেও, তখন তাকে বলে সমুদ্রতরঙ্গ।

৩) তরঙ্গের উচ্চতা বলতে কি বোঝো? 

উঃ সমুদ্র তরঙ্গের শীর্ষ ও খাতের মধ্যবর্তী উল্লম্ব দূরত্বকে সমুদ্র তরঙ্গের উচ্চতা বলে ।

৪) উর্মিভঙ্গ কী? 

উঃ- সমুদ্র তরঙ্গ ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে এলে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হ্রাস পেলেও উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। এই উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালে তরঙ্গ নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে কুন্ডলীর আকার নিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে ভেঙ্গে যায়। একেই উর্মিভঙ্গ বলে। 

৫) ফেচ কি?

উঃ- উন্মুক্ত সমুদ্রে বায়ু যে পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করে উপকূলে এসে পৌঁছায় তাকে ফেচ (Fetch) বলে। ফেচ বেশী হলে বায়ুর গতিবেগ বাড়ে ফলে সমুদ্র তরঙ্গ বৃহদাকার হয়। এই ফেচের উপর সমুদ্র তরঙ্গের উচ্চতা ও শক্তি নির্ভরশীল। 

৬) প্লাঞ্জ কী ?

উঃ যে পর্যায়ে সমুদ্রতরঙ্গের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে কুণ্ডলিত হয়ে আঁকশির আকারে দ্রুতবেগে এগিয়ে যায়, সেই পর্যায়কে বলে প্রাপ্ত।

৭) অনুপ্রস্থ তরঙ্গ কি?

উঃ- সমুদ্র পৃষ্ঠভাগে যে তরঙ্গ ওপর নীচে ওঠানামা করে তাকে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ বলে। প্রবল বায়ুপ্রবাহের জন্য সমুদ্র জলরাশিতে গতির সঞ্চার ঘটলে এরূপ তরঙ্গের সৃষ্টি হয়।

৮) অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ কি?
উঃ- উপকূলের নিকট অনুপ্রস্থ তরঙ্গের বৃত্তাকার কক্ষপথ সমুদ্র বক্ষে ধাক্কা খেয়ে উপবৃত্তাকার পথে পরিবর্তিত হয় এবং তরঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে চলে। এই তরঙ্গকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে। 

৯) সোয়াশ কি?
উঃ- সমুদ্রতরঙ্গ যখন অগভীর জলে এসে পৌঁছায় তখন তরঙ্গের চূড়া ক্রমশ কুন্ডলাকারে উপরে ওঠে ও ভেঙ্গে গিয়ে জলরাশি প্রবল বেগে সৈকত ভূমিতে ধাক্কা দিয়ে উপকূলের দিকে এগিয়ে যায়। একে সোয়াশ বলে। 

১০) ব্যাকওয়াশ কি ?

উঃ- সোয়াশ উপকুলে আছড়ে পরার পর তটভূমির ঢাল বেয়ে পুনরায় অন্তঃতরঙ্গ রুপে সমুদ্রে ফিরে যায়। একেই ব্যাকওয়াশ বলে। 

১১) ক্ল্যাপোটিস কী? 

উঃ  ইংরেজীতে 'Clap' শব্দের অর্থ করতালি। প্রত্যাবর্তনকারী তরঙ্গ ও সমুদ্র থেকে আগত তরঙ্গের ফলে সৃষ্ট দণ্ডায়মান তরঙ্গকে ক্ল্যাপোটিস বলে।

১২)  বিনাশ তরঙ্গ কি?

উঃ- সমুদ্রে প্রবল ঝড় বা তুফান উঠলে এক বৃহৎ আকারের ঝটিকা তরঙ্গের জন্ম হয় যা উপকূল্ভাগের ধ্বংস সাধন করে। একে বিনাশকারী তরঙ্গ বলে। এই ক্ষেত্রে সোয়াশের চেয়ে ব্যাকওয়াশ অধিক শক্তিশালী হয়। 

১৩) গঠনকারী তরঙ্গ কি?

উঃ- যে সকল সমুদ্র তরঙ্গ অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী তারা উপকূলে আঘাত করে কম শক্তি নিয়ে অন্তঃস্রোত রূপে এগিয়ে চলে। ফলে নুড়ি, বালি ইত্যাদি বেশীর ভাগ সৈকতে সঞ্চয় হয়। কম গতিসম্পন্ন অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রকৃতির এই রুপ তরঙ্গকে গঠনকারী তরঙ্গ বলে। 

১৪) সমুদ্র ভৃগু কি?
উঃ- সমুদ্র তরঙ্গের আঘাতে তটভূমি ও স্থলভাগের সংযোগস্থলে যে খাড়া পাড়যুক্ত ভূমিরূপ তৈরি হয় তাকে সমুদ্র ভৃগু বলে। শিলাস্তরের নতি, শিলার প্রকৃতি, শিলাস্তরের বিন্যাস, ভৃগুর মস্তক ও পাদদেশে ক্ষয় প্রভৃতির উপর সমুদ্র ভৃগুর গঠন নির্ভরশীল।

১৫) ) সামুদ্রিক খিলান কি?
উঃ- সমুদ্রের দিকে অভিক্ষিপ্ত সংকীর্ণ স্থলভাগ সমুদ্র তরঙ্গের ক্রমাগত আঘাতের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোটো সেতু বা ব্রিজের আকৃতি ধারন করলে তাকে সামুদ্রিক খিলান বলে। এক্ষেত্রে যে সুড়ঙ্গ তৈরি হয় তার ছাদ খিলানের ন্যায় অবস্থান করে। 

১৬) তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চ কি?

উঃ- উপকূল ভাগের উঁচু খাড়াপাড় বা ভৃগু যখন প্রবল সমুদ্র তরঙ্গের আঘাতে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে তখন ভৃগুর পাদদেশ থেকে সমুদ্রের দিকে এক-একটি মঞ্চ আকৃতির সমতল ভূমি নেমে আসে। একে তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চ বলে। 

১৭) সম্মুখ তটভূমি’ বলতে কী বােঝাে?

ঊঃ ভাটার সময় নিম্নতম জলসীমা থেকে জোয়ারের সময় উচ্চতম জলসীমার গড় উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে সম্মুখ তটভূমি’ বলে।

১৮) ভৃগুর পাদদেশে তরঙ্গকর্তিত মঞ গঠিত হয় কেন?

ঊঃ সমুদ্রতরঙ্গের ক্ষয়ের ফলে ভৃগুর পাদদেশে নরম শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সঞ্চিত হয়ে তরঙ্গকর্তিত মণ্ড সৃষ্টি হয়।

১৯) স্ট্যাক কি?
উঃ- প্রবল সমুদ্র তরঙ্গের আঘাতে প্রাকৃতিক খিলানের ছাদ ভেঙ্গে গেলে খিলানের দুই পাশের শিলাস্তর খাড়া স্তম্ভ বা পায়ার মতন দাড়িয়ে থাকে। একেই স্ট্যাক বা সামুদ্রিক স্তম্ভ বলে। উদাহরণ - ওর্কনি দ্বীপের Old Man Of Hoy। 

২০) স্ট্যাম্প কি?
উঃ- ক্রমাগত সমুদ্র তরঙ্গের আঘাতে স্ট্যাক ক্ষয়ে গিয়ে জলতল পৃষ্ঠের সমান বা তার সামান্য নীচে অবস্থান করলে তাকে স্ট্যাম্প বলে। ভারতের গোয়া উপকূলে স্ট্যাম্প দেখা যায়।

২১) ব্লোহোল কি ?
উঃ- সমুদ্র উপকূলে গুহার গহ্বর ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হলে বহিঃপৃষ্ঠের নিকট চলে আসে এবং এক সরু, খাড়া গহ্বর তৈরি করে যা ভূ পৃষ্ঠে উন্মুক্ত হয়। এই ধরনের গর্তকে ব্লোহল এবং স্কটল্যান্ডে গ্লুপ বলে।  

২২) তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চ কি?
উঃ- উপকূল ভাগের উঁচু খাড়াপাড় বা ভৃগু যখন প্রবল সমুদ্র তরঙ্গের আঘাতে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে তখন ভৃগুর পাদদেশ থেকে সমুদ্রের দিকে এক-একটি মঞ্চ আকৃতির সমতল ভূমি নেমে আসে। একে তরঙ্গ কর্তিত মঞ্চ বলে। 

২৩) কোভ ও বাইট কি ?
উঃ- সমুদ্র উপকূলের কোমল শিলায় তরঙ্গের আঘাতে যে বৃত্তাকার খাঁড়ির সৃষ্টি হয় তাকে কোভ বলে। বৃহদাকার কোভকে বাইট বলে।

২৪) বার্ম কী ?

উঃ পশ্চাৎ ও সম্মুখ তটভূমির সংযােগস্থলে তরঙ্গবাহিত শিলা,নুড়ি, পাথর ইত্যাদি দ্বারা গঠিত সােপান হল বার্ম।

২৫) হেডল্যান্ড কি ?

উঃ- উপকূলরেখার পশ্চাদপসরণের ফলে যদি অধিক মাত্রায় সমুদ্র ভৃগু ক্ষয় প্রাপ্ত হয় তখন সেই ভৃগুর থেকে একটি ক্ষয় প্রতিরোধকারী অংশ সমুদ্রে অভিক্ষিপ্ত থাকে একে হেডল্যান্ড বা অগ্রভূমি বলে। 

২৬) সামুদ্রিক বাঁধ কি?

উঃ- অনেক ক্ষেত্রে উপকূল থেকে কিছুটা দূরে সমুদ্রবক্ষে সমুদ্র তরঙ্গের দ্বারা বয়ে আনা ক্ষয়জাত নুড়ি, বালি প্রভৃতি উপকূল রেখার সমান্তরালে সঞ্চিত হয়ে যে সংকীর্ন ও দীর্ঘায়িত স্তূপ গড়ে ওঠে তাকে সামুদ্রিক বাঁধ বা চরবাঁধ বলে।






Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code