Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

ত্রিকোশীয় সংবহন মডেল (Tricellular Circulation Model)

 

ত্রিকোশীয় সংবহন মডেল (Tricellular Circulation Model)

সংজ্ঞাঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ১৯৫১ সালে বিজ্ঞানী পলম্যান লক্ষ্য করেন যে উভয়গোলার্ধে বায়ুমন্ডলের তাপ ও ভরবেগের উল্লম্ব ও অনুভূমিক প্রবাহ যা ক্রান্তীয় , মধ্য- অক্ষাংশীয় এবং মেরু অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয় একে পলম্যান ত্রিকোশীয় সংবহন মডেল নামে অভিহিত করেন।




এই তত্ত্বে তিনি তিনটি বায়ুকোশের কথা বলেন,সেগুলি হল

১) ক্রান্তীয় বা হ্যাডলী কোশ (Tropical or Hadly cell)

২) মধ্য – অক্ষাংশীয় বা ফেরেল কোশ (Temperate or Ferel Cell)

৩) মেরু কোশ (Polar Cell)

 


 ১) ক্রান্তীয় বা হ্যাডলী কোশ (Tropical or Hadly cell)

সংজ্ঞাঃ নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চল থেকে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ অঞ্চল পর্যন্ত যে বায়ুপ্রবাহ মেরু অভিমুখে প্রবাহিত হয় তাকে ক্রান্তীয় বা হ্যাডলী কোশ (Tropical or Hadly cell) বলে।

নামকরণঃ ১৭৩৫ সালে বিট্রিশ আবহবিদ জর্জ হ্যাডলি প্রথম পরিচলন মডেলের ব্যাখায় এই কোশের অবস্থানের কথা বলেন।তাঁর নামানুসারে এর নাম হয় হ্যাডলী কোশ (Hadly cell)

অবস্থানঃ নিরক্ষরেখার উভয় গোলার্ধে ০ থেকে ৩০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থান করে।

উৎপত্তিঃ উচ্চ ট্রপোয়াফীয়ারে উষ্ণ উর্ধগামী বায়ু শীতল ও ঘনীভূত হয়ে নিম্নে প্রবাহিত হতে গেলে নিম্নে পরিচলন বায়ুর প্রবাহের কারণে নিচে নামতে পারেনা।এর পর  কেন্দ্রাতিক বল ও পরিত্যক্ত লীনতাপের কারণে বায়ু মেরুদিকে প্রবাহিত হয় তাই একে প্রত্যাবর্তন বায়ু বলে।এই বায়ু অবশেষে উপক্রান্তিয় অঞ্চলে গিয়ে নিম্নে প্রবাহিত ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে।এই অবতরণের ফলে ঐ অঞ্চলটিতে বায়ু নিশ্চল অবস্থায় থাকে একে অশ্ব অক্ষাংশ ( Horse Latitude) বলে। এই অঞ্চল থেকে বায়ু নিরক্ষরেখার অভিমুখে উত্তর গোলার্ধে উত্তর – পুর্ব বানিজ্য বায়ু নামে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ – পুর্ব বানিজ্য বায়ু নামে প্রবাহিত হয়। এরপর এই বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলে মিলিত হয়ে আন্তঃক্রান্তীয় মিলন অঞ্চল ( ITCZ) গঠন করে। এই অঞ্চলকে শান্তবলয় বা ড্রলডাম বলে । অক্ষাংশভেদে তাপীয় কারণে সৃষ্টি হয় বলে একে তাপীয় কোশ বলা হয়।

 ২) মধ্য – অক্ষাংশীয় বা ফেরেল কোশ (Temperate or Ferel Cell)

সংজ্ঞাঃ উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে উপমেরু নিম্নচাপ অঞ্চল পর্যন্ত যে বায়ুপ্রবাহ মেরু অভিমুখে কোরিওলিস বলের প্রভাবে পশ্চিম থেকে পুর্ব দিকে  প্রবাহিত হয় তাকে  মধ্য – অক্ষাংশীয় বা ফেরেল কোশ (Temperate or Ferel Cell) বলে।

নামকরণঃ ফেরেলের নামানুসারে এই কোশটির নাম হয়। ১৮৫৬ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী ফেরেল ভূপৃষ্ঠে বায়ুপ্রবাহের ব্যাখার প্রসঙ্গে এই কোশের উল্লেখ করেন ।   

অবস্থানঃ ৩০ থেকে ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে উপমেরু অঞ্চলের মধ্যে এই কোশ অবস্থান করে।

উৎপত্তিঃ উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু ( দক্ষিণ গোলার্ধে) এবং দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু ( উত্তর গোলার্ধে) মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় , অন্যদিকে উত্তর পুর্ব মেরু বায়ু (উত্তর গোলার্ধে) এবং দক্ষিণ পুর্ব মেরু বায়ু ( দক্ষিণ গোলার্ধে) উপক্রান্তীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। এই সময় উত্তর গোলার্ধে ফেরেলের সূত্র অনুসারে ডান দিকে বেঁকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়। এই দুই বায়ুর মিলনস্থলে এক বায়ুপ্রাচীর গঠন করে। এই অঞ্চলে ফেরেল কোশটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ।নাতিশীতোষ্ণ ও প্রতীপ ঘুর্নবাত দ্বারা পশ্চিমাবায়ু বিঘ্নিত হয়।

 ৩) মেরু কোশ (Polar Cell)

   সংজ্ঞাঃ উপমেরু নিম্নচাপ অঞ্চল থেকে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ অঞ্চল পর্যন্ত যে বায়ুপ্রবাহ মেরু অভিমুখে প্রবাহিত হয় তাকে মেরু কোশ (Polar Cell) বলে।

অবস্থানঃ ৬০ থেকে ৯০ ডিগ্রি অক্ষাংশের মধ্যে উপমেরু নিম্নচাপ অঞ্চল থেকে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের মধ্যে এই কোশ অবস্থান করে।

উৎপত্তিঃ মেরু অঞ্চলে উদ্ধমুখী বায়ু কোরিওলিস বলের প্রভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে শীতল ও ভারী হয়ে মেরু অঞ্চলে নেমে আসে। উপমেরু বায়ু মেরু অঞ্চলে অবতরণের সময় বায়ুর চাপ বেড়ে যায় এরফলে বায়ুচাপ ঢালে শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যারফলে বায়ু মেরু থেকে উপমেরু অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। এই অঞ্চলে পূবালী বায়ু প্রবাহিত হয়। এই অঞ্চলে দুই ভিন্নধর্মী বায়ু যথাঃ শীতল মেরু বায়ু ও উষ্ণ পশ্চিমা বায়ুর মিলিত হয়ে ঘূর্ণীঝড়ের সৃষ্টি হয় ।

 

  আরো পড়ুন:-

ভাষাঃ বাংলা 
 
ডাউনলোডের জন্য  CLICK HERE 

 

 

 

 

 

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code