Ad Code

Ticker

7/recent/ticker-posts

ওড়িশার কৃষি // agriculture of odisha

    


                                  ওড়িশার কৃষি 

কৃষি ওড়িশা রাজ্যের অর্থনীতিতে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। কৃষিকাজ হল ওড়িশার মানুষের প্রধান পেশা। ২০১৭-২০১৮ গণনা অনুসারে রাজ্যে কর্মরত জনসংখ্যার আনুমানিক ৪৮.৮ শতাংশ মানুষ কৃষিক্ষেত্রে নিযুক্ত রয়েছে। ওড়িশায় মোট ফসলি জমির পরিমাণ ৮৭,৪৬,০০০ হেক্টর এবং এর মধ্যে ১৮,৭৯,০০০ হেক্টর জলসেচের আয়তায় আছে। ধান হল ওড়িশার প্রধান ফসল এবং ওড়িয়াদের প্রধান খাদ্য। 



* প্রধান প্রধান খাদ্যশস্যঃ——   

        ওড়িশা ভারতের অন্যতম প্রধান ধান উৎপাদক রাজ্য। অনুকূল জলবায়ু এবং সমৃদ্ধ মাটির উপস্থিতি ওড়িশার সমৃদ্ধশালী কৃষির জন্য দায়ী। মোট আবাদযোগ্য ক্ষেত্রের প্রায় ৩ শতাংশ ধান উৎপাদনের আওতাধীন এবং মোট খাদ্যশস্যের ৭৯ শতাংশই হল ধান। 



        আর একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শস্য হ'ল ডাল এবং তেলের বীজ যেমন সরিষা, তিল, তিসি, চিনাবাদাম ইত্যাদি। আখ এখানকার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল, যদিও কিছু কিছু জেলা যেমন কটক, বালেশ্বর ইত্যাদি জেলায় সামান্য পরিমাণে পাট উৎপাদিত হয। এছাড়া এখানে চা, কফি, রাবার, কাজু বাদাম এবং বিভিন্ন মশলার উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টাও চলছে। এই রাজ্যে নারকেলও উৎপাদিত হয়। এই রাজ্যে উৎপাদিত প্রধান খাদ্যশস্য গুলি হল –

ধান(Rice) 

পাট(Jute)

তৈল বীজ(Oil seed)

ডাল(Pulses)

নারিকেল(Coconut)

আঁখ(Sugarcane)

চা(Tea)

রাবার(Rubber)

সুতি(Cotton)

ছোলা(Gram)

সরিষা(Mustard)

ভুট্টা(Maize)

তিল(Sesame)

রাগি(Ragi)

আলু(Potato)

সয়াবিন(Soyabin)



ডালঃ—   ওড়িশার প্রধান ডাল- ছোলা, তুর ও অরহড় ডাল। ডালগুলি খারিফ ও রবি ফসলে বিস্তৃতভাবে ভাগ করা হয়েছে। সেচযুক্ত এলাকা যেমন মহানদী বদ্বীপ, রশিকুল্য সমভূমি, হিরাকুদ এবং বদিমুলা অঞ্চলগুলিতে ওড়িশার সর্বাধিক ডাল জন্মায়। 

তৈলবীজঃ—   ওড়িশায় উৎপন্ন প্রধান তৈলবীজ হল তিল, চীনাবাদাম, সরিষা, ক্যাস্টর এবং তিসি। তৈলবীজের মধ্যে চীনাবাদাম এবং ক্যাস্টর শক্ত ফসল এবং প্রান্তিক ও উপ-প্রান্তিক জমিতে জন্মে। কটক, কোরাপুট, কালাহান্দি, বলঙ্গির, সম্বলপুর, ঢেঙ্কানল এবং গঞ্জম জেলাগুলিতে নিবিষ্ট রুপে তৈলবীজ চাষ হয়। মাটির উচ্চমাত্রার লবণাক্ততার কারণে বেশিরভাগ নারকেল উপকূলীয় সমভূমিতে সীমাবদ্ধ থাকে।

অর্থকরী ফসলঃ—   অর্থকরী ফসলের মধ্যে তন্তু ফসল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং আসামের পরে ওড়িশা হল পাটের চতুর্থ বৃহত্তম উৎপাদক। পাটের চাষ মূলত কটক, বালাসোর ও পুরী জেলার উপকূলীয় সমভূমিতে সীমাবদ্ধ। এখানে যথেষ্ট পরিমাণে রেশমের চাষ হয়। 

               ওড়িশার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থকরী ফসল হল আখ। এটি সেচযুক্ত জমিতে জন্মায়। ওড়িশা আঁখ উৎপাদনে ভারতে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। কটক, সমবলপুর, বালাঙ্গীর, কালাহান্দি এবং পুরী জেলায় প্রচুর পরিমাণে আঁখের চাষ হয়, উড়িষ্যায় অল্প পরিমাণে তামাক উৎপাদন হয়। অর্থকরী ফসল উৎপাদনে, কটক জেলা শীর্ষে।

রাবার চাষঃ—   পূর্বঘাটের অবক্ষয়যুক্ত ঢালগুলি রক্ষার জন্য রাবার বোর্ড কর্তৃক রাবার লাগানো হয়। অনুকূল কৃষি জলবায়ুর উপস্থিতির কারনে প্রাকৃতিক রাবারের উজ্জ্বল বিকাশ ঘটে উত্তর ওড়িশার মায়ুরভঞ্জ, কেন্দুঝর এবং বালেশ্বর জেলায়। কটক, পুরী, গঞ্জাম এবং ঢেঙ্কানাল জেলার অভ্যন্তরীণ পার্বত্য অঞ্চলে রাবার চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু পরিস্থিতি রয়েছে। 

তুলা চাষঃ—   কোরাপুট, বালানগীর এবং কালাহান্দি জেলায় যেখানে উপযুক্ত মাটি এবং জলবায়ু পরিস্থিতি পাওয়া যায় সেখানে তুলার চাষ ব্যাপকভাবে হয়। বালেশ্বর জেলার বলিপাল অঞ্চলে সমুদ্র দ্বীপীয় তুলা চাষ করা হয়। 

চাঃ—   এটি পূর্ব ঘাট, কেন্দুঝর, ফুলবাণী ও কোরাপুতের পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে জন্মায়। 

কফিঃ—   এটি  পূর্ব ঘাট, কোরাপুট, কালহান্দি, মালকানগিরি, রায়গদা, উদয়গিরি এবং বলিগুদা অঞ্চলের বনভূমিতে কেন্দ্রীভূত। 

** ওড়িশায় কৃষির সমস্যাঃ—

               ওড়িশা কৃষির যে প্রধান সমস্যাটির মুখোমুখি হচ্ছে তা হ'ল অনেক অঞ্চলে জলের সংকট দেখা দেয়। খরা প্রবণ অঞ্চলে সেচের সুবিধার অভাব কৃষিতে বড় বাধা সৃষ্টি করে। বন্যা এবং হেক্টর প্রতি কম উৎপাদন রাজ্যের অন্যান্য কৃষি সমস্যা।

         ওড়িশা সরকারের কৃষি বিভাগ এবং এর তিনটি শাখা - উদ্যানতত্ত্ব অধিদপ্তর, কৃষি অধিদপ্তর, মাটি সংরক্ষণ ও জলাশয় মিশন এই বাধাগুলির সমাধান খুঁজতে কঠোর পরিশ্রম করছে। ওড়িশার কয়েকটি প্রধান কৃষি কেন্দ্র হ'ল: 

কটক

ঢেঙ্কানাল

বালেশ্বর

সম্বলপুর

             মৎস্য শিকার এই রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপ। এই রাজ্যে প্রচুর পরিমাণে সমুদ্রের মাছ এবং অভ্যন্তরীণ জলের মাছ চাষ করা হয়।

গার্গী দাস 

জিওগ্রাফিয়া

 তথসুত্রঃ— Maps of India, Orissa pcs exam notes, Wikipedia, ENVIS centre of odisha’s state of environment 

 

Reactions

Post a Comment

0 Comments

Ad Code